অস্থিরতা তৈরির জন্য অস্ত্র আসে মিয়ানমার থেকে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

| সোমবার , ৪ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:১৩ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টায় মিয়ানমার থেকে বিভিন্নভাবে অস্ত্র আসছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তবে তার দাবি, আশ্রয় শিবিরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট ভালো এবং রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহর হত্যাকারীদের শিগগিরই আইনে আওতায় আনা সম্ভব হবে। খবর বিডিনিউজের।
শারদীয় দুর্গোৎসব সামনে রেখে গতকাল রোববার সচিবালয়ে আইনশৃক্সখলা বিষয়ক সভা শেষে সংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্য আসে। রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে ক্যাম্পের ভেতরে গুলি করে হত্যার ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। সে বিষয়ে এক সাংবাদিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন-তাহলে কি সরকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃক্সখলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না?
এর উত্তরে মন্ত্রী বলেন, নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, এই কথাটি কিন্তু আপনি ঠিক বলেননি। আইনশৃক্সখলা বাহিনী সেখানে যথেষ্ট সংখ্যক আছে এবং আইনশৃক্সখলাও সেখানে যথেষ্ট ভালো। মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এই ধরনের মারামারি আপনারা আগেও দেখেছেন। মিয়ানমার থেকে বিভিন্নভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিবেশ অস্থির করার জন্য এখানে অস্ত্র আসছে। অস্ত্র নিয়ে তাদের আধিপত্য বিস্তার করার জন্য বিভিন্ন গ্রুপের মারামারিও দেখেছেন। যে নেতার (মুহিবুল্লাহ) কথা বলছেন, সে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সবসময় সোচ্চার ছিল। আমরা মনে করি, তার এই ঘটনাটা তদন্ত করে এর মূল কারণটা বের করতে হবে। সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ায় লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৪৮ বছর বয়সী মুহিবুল্লাহকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী। তিনি ছিলেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নামে রোহিঙ্গাদের একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর এলাকার স্কুলশিক্ষক মুহিবুল্লাহ পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর’ হিসেবে বিবেচিত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ইউএনএইচসিআরসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। পুলিশ ইতোমধ্যে পাঁচ রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে দুজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা তাকে হত্যা করেছে বলে আমরা মনে করছি, শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারব। তদন্ত চলছে, খুব শিগগিরই এর ব্যবস্থা করতে পারব বলে বিশ্বাস করি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কারা অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে? কোনো বিদেশি শক্তি এর সঙ্গে জড়িত? এসব প্রশ্নে মন্ত্রীর উত্তর, সবকিছু তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আমরা কিছুই বলতে পারছি না। অনেক কিছুই সন্দেহ করছি। তদন্তের পর আপনাদের জানাব।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃক্সখলা শিথিল হয়নি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারদিকে কাঁটাতাদের বেড়া দেওয়া হচ্ছে, সেটা কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে। চতুর্দিকে ওয়াচ টাওয়ারও করা হচ্ছে, সেই সাথে তৈরি করা হচ্ছে রাস্তাঘাট। সেখানে অল্প জায়গার ভেতরে ১১ লাখ মানুষের বসবাস করার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, এই বিশাল জনগোষ্ঠী পড়েছে দুটি থানার আওতায়। ফলে সবকিছু ‘মেইনটেইন করা’ সহজ কাজ নয়। তারপরও আমাদের আইনশৃক্সখলা বাহিনী, সেনাবাহিনী সমন্বিতভাবে ভালো কাজ করছে বলে আইনশৃক্সখলা এখনও সঠিক রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুহিবুল্লাহ হত্যা দুই রোহিঙ্গা তিন
পরবর্তী নিবন্ধনকশা অনুমোদন বিষয়ে সিডিএর কাছে ব্যাখ্যা তলব