রাত প্রায় সাড়ে এগারটার সময় আমার এক শুভানুধ্যায়ী আমাকে মোবাইল করে জানতে চাইলেন আমি বেঁচে আছি কিনা। তিনি নাকি তাঁর এক অতি পরিচিতজনের কাছ হতে শুনেছেন কিছুক্ষণ আগে আমি মারা গেছি। আমি তাঁকে বললাম, আমি যখন আপনার সাথে কথা বলছি তখন নিশ্চয়ই মরিনি। আমার সেই শুভানুধ্যায়ী কিন্তু আমার কথা বিশ্বাস করলেন না। করলেন তাঁর সেই অতি পরিচিতজনের কথা। বললেন আমার চাইতে বেশি বিশ্বাসযোগ্য মানুষ হলেন তাঁর সেই পরিচিতজনটি। অদ্ভুত ব্যাপার হলো এক সময় আমার নিজেরই মনে হচ্ছিল আমি বেঁচে আছি কিনা।
আমার স্ত্রী-কে এই কথা বললে সে বললো পাগলামি না করে আমি যাতে তাড়াতাড়ি বাজার করতে যাই। এভাবেই দিন কাটাচ্ছি। আমি আমার চাকরি জীবনের প্রথম দিকে এক সময় রাঙ্গামাটি চাকরি করেছি। অফিসে বসে আছি। এক বুড়ি ভিখেরি অফিসের সামনে ঘুরঘুর করছিল। আমি তাকে অফিসের ভেতরে ঢুকতে বললাম। বুড়ি এদিক-সেদিক তাকিয়ে ইতস্তত করে ভেতরে ঢুকলো।
চাকমারা সাধারণত ভিক্ষে করে না। সে হয়তো নেহাৎ দায়ে পড়ে ভিক্ষে করছে। আমার কাছ হতে তাই ভিক্ষে চাইতে পারছিল না। আমি বুড়ি ভিখেরিটিকে দশ টাকা দিলাম। সে বললো এতো টাকার তার দরকার নেই। আমাকে শুধুমাত্র তিন টাকা দিতে বললো। আমি তাই দিলাম। কৃতজ্ঞতায় বুড়ি ভিখেরিটির চোখ হতে জল পড়ছিল। তার সাথে ছিল একটা পোষা কুকুর।
দেখলাম কুকুরটির চোখ হতেও জল পড়ছে। বুড়ি যাবার সময় বললো, আমি যেন পরজন্মে তার পোষা কুকুরটির মতো প্রভুভক্ত কুকুর হয়ে জন্মগ্রহণ করি। পরজন্মে আমার বিশ্বাস নেই, তবে এ-জন্মেই দেখছি কুকুর আমাকে দেখলে লেজ নেড়ে আনন্দ প্রকাশ করে। হয়তো সে মনে করে আমি তার স্বগোত্রীয়।