নির্বাচন সামনে রেখে অনেক ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতির সামনে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। তবে সমস্ত ষড়যন্ত্র চক্রান্তকে পরাজিত করবার শক্তিবাংলাদেশের মানুষের আছে বলেও আশাবাদের কথা শুনিয়েছেন তিনি।
গতকাল রোববার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, এই সামনের যে পরীক্ষা, সেই পরীক্ষা কঠিন পরীক্ষা। প্রতিদিন আপনাদের এই ইউটিউব, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়া, এগুলোতে বিভিন্ন রকম সত্য–মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমার বিশ্বাস যে, আপনারা এখান থেকে সঠিক তথ্যটি বেছে নিতে সক্ষম। আমার বিশ্বাস, এই দেশের মানুষ কখনো ভুল করে না, এই দেশের মানুষ সবসময় সঠিক পথে এগিয়ে যায়। খবর বিডিনিউজের।
ফখরুল বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে আমরা সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে চাই, যেখানে একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তার আস্থা প্রকাশ করবে এবং তাদের একটা পার্লামেন্ট বেছে নেবে এবং তাদের সরকার বেছে নেবে। আপনাদেরকে আবার অনুরোধ করব, যে সুযোগ আমরা পেয়েছি বাংলাদেশকে নতুন করে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবার, সেই সুযোগ যেন আমরা না হারাই।
জামায়াতে ইসলামীসহ ছয়টি দল সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে যে আন্দোলন করছে, তার সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এর লক্ষ্য একটাই, সেই লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা। পিআর পদ্ধতি এই দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তো আমরা স্পষ্ট করে বলেছি। এখন বলছি, জনগণই এই পদ্ধতি গ্রহণ করবে না, চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছু এদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।
ফখরুল বলেন, জনগণ নির্বাচন দেখতে চায়। এবং সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায় এবং গণতন্ত্রের মধ্য দিয়েই জনগণের আশা–আকাঙ্ক্ষাগুলো পূরণ করতে চায়। আগামী নির্বাচনে আবারও জনগণের রায় পাওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নির্বাচনে যে–কোনো দল জয়ী হতে পারে জনগণের ইচ্ছার উপর দিয়ে। কিন্তু সেই দলকেই জনগণ বেছে নেবে, যে দল পরীক্ষিত, অতীতে যারা পরীক্ষা দিয়েছে, অর্থাৎ সরকারে ছিল, কাজ করেছে। যে দল মানুষকে আশার আলো দেখিয়েছে, যে দল অন্ধকার থেকে আলোতে টেনে নিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই এই দেশে প্রথম সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংযোজন করেছিলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই প্রথম এই দেশের সংবিধানে আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস কথাটি নিয়ে এসেছিলেন। এখন কিছু দল সেগুলোকে বিকৃত করে বিভিন্নভাবে বিএনপিকে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করছে।
একাত্তর কখনো মুছে ফেলা যাবে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই কথাটা খুব জরুরি, কিছু সংখ্যক মানুষ চেষ্টা করে আমাদের ১৯৭১ সালের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে। এটাও সবসময় মাথায় রাখতে হবে যে, একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছিল বলেই আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম। স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই আজকে আমরা নতুন রাষ্ট্রের নতুন চিন্তা করতে পারছি, স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই কিন্তু আমরা আজকে এই বাংলাদেশকে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করবার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামে অংশ নিতে পারছি।
ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১৪ মাসের মধ্যে আলাদিনের চেরাগ দিয়ে রাতারাতি বাংলাদেশকে সুন্দর বানিয়ে ফেলবে–এই আশা জনগণ করে না। তবে সেই প্রক্রিয়াটা শুরু হোক, সেটাই চায়। আর বিএনপি কীভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে চায়, সে কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দুটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টানেন মহাসচিব। তিনি বলেন, বেকার সমস্যাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে বিএনপি ইতোমধ্যে কমিটি গঠন করে কাজ শুরু করেছে এবং অনেক কাজ সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে।