দেশের বড় বড় শিল্প গ্রুপগুলো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসা কেড়ে নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মু. রহমাতুল মুনিম। তিনি বলেছেন, বড় কোম্পানিগুলো যদি মুড়ি, চানাচুর উৎপাদন করে, তাহলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কীভাবে টিকবে? গতকাল রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রাক্– বাজেট আলোচনায় তার এ মন্তব্য আসে। বেশ কয়েক বছর ধরে টানা বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেওয়ার পরও দেশে এসএমই খাতের কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এসএমইকে ওঠাতে পারছি না। বড় প্লেয়াররা এসএমইকে খেয়ে ফেলছে। এসএমইর ভবিষ্যৎ খুব অন্ধকার। খবর বিডিনিউজের। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কীভাবে সুবিধা দেওয়া যায়, তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, এটা নিয়ে ভালো করে কাজ করা দরকার। সমস্যাটা কোথায়? কোথায় কাজ করতে হবে, এটা নিয়ে আরও গভীরে দেখা দরকার। কেনো এসএমই ফ্লারিশ করছে না। এনবিআরের তরফ থেকে নানা কিছু করে দিলাম। তারপরেও কেনো ভালো করছে না সেটা দেখা দরকার। দেশের যুব সমাজকে তামাক থেকে দূরে রাখার পাশাপাশি রাজস্ব আহরণ বাড়াতে সিগারেটের ওপর নতুন করে ৭০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। অর্থনীতি সমিতি মনে করে, দেশের যুব সমাজকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব দূরে রাখতে প্রতি বছরই বিড়ি, সিগারেট, জর্দা ও গুলসহ সকল তামাক পণ্যের দাম বাড়ানোর উদ্দেশ্যে শুল্ক বাড়ানো উচিত। পাশাপাশি এই হারে শুল্ক বাড়ানো হলে শুধুমাত্র এ খাত থেকেই প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত কর আদায় সম্ভব।
কালো ও পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার, সম্পদ কর এবং অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কর বসিয়েও রাজস্ব বাড়ানোর পরামর্শ দেন অর্থনীতির সমিতির সাধারণ সম্পাদক। এসব খাতসহ মোট ২৭টি নতুন খাতের ওপর নতুন করে কর বসিয়ে আগামী বাজেটে অর্থ যোগানের পাশাপাশি বৈষম্য কমানো সম্ভব বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
আরো যা যা প্রস্তাব : এসএমএসি অ্যাডভাইজেরি সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক স্নেহাশিস বড়ুয়া বলেন, কর আদায় ব্যবস্থা যত সহজ করা হবে রাজস্ব আদায় তত বাড়বে। সাধারণ মানুষ যেন কর প্রদান ব্যবস্থাকে কঠিন কিছু মনে না করেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, জমি নিবন্ধনের ওপর কর হার কমিয়ে জমির মৌজা মূল্য বাস্তবসম্মত করা উচিত। তাহলে দেশে কালো টাকা কমবে, আবার এই খাত থেকে কর আদায়ও ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে। দেশে এসএমই শিল্পের বিকাশে এ খাতের পশ্চাদ–শিল্পের জন্য একটি পৃথক ভ্যাট ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রস্তাব দেন তিনি।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাহউদ্দিন মাহমুদ ছোট ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পুরুষের করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা এবং মহিলা উদ্যোক্তার জন্য করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দেন। এছাড়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের করযোগ্য আয়ের ওপর রেয়াত ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। সরকারি সিকিউরিটিজের বিনিয়োগ সীমা ৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা এবং রপ্তানি থেকে প্রাপ্ত নগদ ভর্তুকির উৎসে কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন।