পটিয়ার চানখালী খালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) চলছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ (ফ্লাড ওয়াল) নির্মাণের কাজ। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ শীর্ষক ১১৫৮ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকার মেগা প্রকল্পের আওতায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ ফ্লাড নির্মাণে বড় ধরণের ক্ষতির দাবি করেছেন পটিয়া ইন্দ্রপুল লবণ শিল্পের ক্ষতিগ্রস্থ শিল্প মালিকরা। এতে ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়েও চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মেগা প্রকল্পের আওতায় পটিয়া চানখালী খালে বন্যা নিয়ন্ত্রণে ২৭শ’ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ (ফ্লাড ওয়াল) নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এ নির্মাণ কাজে পটিয়ার ১৫–১৬টি লবণ শিল্প মালিকদের প্রায় ২০০–২৫০ শতক জায়গা ফ্লাড ওয়াল নির্মাণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফ্লাড নির্মাণের ফলে এসব জায়গা মিল মালিকদের বেহাত হয়ে যায় এবং এতে মিল মালিকদের কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ বিষয়ে আনোয়ারা সল্টের মালিক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ কাজে আমি আমার লবণের গোডাউন খালি করে তাদের কাজের সুযোগ করে দিয়েছি। এখন ফ্লাড ওয়াল নির্মাণের ফলে আমাদের লবণ শিল্পের অনেক জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে। গত ১ বছর পূর্বে নোটিশ ইস্যু করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ও জায়গার পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলমান বলা হয়েছিল। কিন্তু এক বছর পরও এখনো কোন নোটিশ দেয়া হয়নি। ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফ্লাড ওয়াল নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ দিকে। এর ফলে আমাদের ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া পানি উন্নয়ন উপ বিভাগ, বাপাউবোর উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী আনিস হায়দার খান জানান, পটিয়া উপজেলায় চানখালীর পাড়ে গড়ে ওঠা লবণ শিল্প এলাকাকে দীর্ঘমেয়াদে বন্যা ও জোয়ারের লোনা পানির হাত থেকে রক্ষায় ডান তীরে ১.৮৫ কিমি এবং বাম তীরে ০.৮৫ কিমি ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। বিদ্যমান লবণ শিল্প এলাকায় জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষেই বাঁধের বদলে ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। ফ্লাড ওয়ালটি খালের পাড় ঘেঁষে নির্মাণ করা হচ্ছে। ওয়ালটির পুরুত্ব হবে ৪৫–৩০ সেমি এবং এবং এর জন্য কোন জমি অধিগ্রহণের সুযোগ নেই। কাজের শুরু থেকেই এখন পর্যন্ত সর্বদাই লবণ মালিক সমিতি, বিসিকসহ সকলের সহযোগিতার ফলে কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। সম্প্রতি লবণ মালিক সমিতি হতে ফ্লাড ওয়ালের কিছু স্থানে আনলোডিং এর সুবিধার্থে উচ্চতা হ্রাস করার বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে এবং এ ব্যাপারে ডিজাইন রিভিউ করতে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। জানতে চাইলে পটিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মাহবুব আলম জানান, নদী আইনে খাল যে দিকে প্রভাহিত হয় সেটাই নদী বা খাল। খাল বা নদীর অবস্থানের ১০ মিটারের মধ্যে কোন স্টেকচার করতে পারবে না। সে হিসেবে যারা ক্ষতিপূরণের দাবি করছে তারা কোনভাবেই ক্ষতিপূরণ পাওয়া কথা নয়। এ ফ্লাড ওয়ালটি ১১ফিট উচ্চতার। এতে বন্যার সময় লবণ শিল্প এলাকায় কোন ধরনের পানি উঠার সম্ভাবনা নেই। এছাড়া বিভিন্ন দূরত্বে গেট রাখা হচ্ছে। যাতে বন্যা বা ভারী বর্ষণে উপরের পানি খালে চলে যেতে পারে।