ইন্টারনেট বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে কিছু ব্যবসায়ীর কারসাজিতে খোলা বাজারে ১২৫ টাকা দরে ডলার উঠে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিয়েছে মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। সংগঠনটি ডলারের বিক্রয়মূল্য সর্বোচ্চ ১১৯ টাকা বেঁধে দিয়ে মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে চিঠি দিয়েছে গতকাল বুধবার। দর নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এস জামান বলেন, কিছু ব্যবসায়ী ডলার দরকে অস্থিতিশীল করেছেন। এ জন্য ডলারের দর ১২৫ টাকা উঠে যায়। এই নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগেও দেওয়া ছিল। তবে ডলারের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে যাওয়ার কারণে মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেই নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে খোলা বাজারে ডলারের দর ১২৫ টাকায় উঠে যায়। দুই সপ্তাহ আগেও ডলারের দর ছিল ১১৮ থেকে ১১৯ টাকা। বুধবার দুপুরে ঢাকার মতিঝিলের দিলকুশা এলাকায় কয়েকটি মানি চেঞ্জার ঘুরে দেখা যায় যায় ১২৫ টাকা দরে ডলার বিক্রি হচ্ছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার জেরে ১৭ জুলাই রাতে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ হয়ে যায়। পাঁচ দিন পর ব্রডব্যান্ড এবং ১০ দিন পর মোবাইল ইন্টারনেট ফেরে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং খাতে রেমিটেন্স আসা কমেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার একটা প্রভাব পড়েছে ডলার বাজারে। এর সুযোগ নিয়েছে বাইরের দেশের হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। ব্যাংকিং খাতে রেমিটেন্স কমে যাওয়ার কারণে খোলা বাজারে বেড়ে যায় ডলারের দাম।
এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট হওয়ার কারণে অনলাইনে ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স কমে এসেছে। এর সুযোগ নিয়েছে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। এটা এখন বন্ধ করতে হবে। প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠাবে ব্যাংকিং চ্যানেলেই। ইন্টারনেট ব্ল্যাকআাউটের কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে একটা ধাক্কা গেছে। সেটা সরকারকে কাঁটিয়ে উঠতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে একতা স্থিতিশীল পর্যায় নিয়ে আসতে হবে। তাহলে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার আসা বাড়বে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, খোলা বাজারে ডলারের দর বাড়ছে। তবে এটা কয়েক দিনের মধ্যে কমে যাবে। ডলার দর বাড়বে, আবার কমবেও; এটা স্বাভাবিক। দেশের সামগ্রিক অবস্থার সুযোগ নিয়ে দর বাড়ানো হচ্ছে। তবে আশা করা যায় চার–পাঁচ দিনের মধ্যে কমে যাবে।