আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৬ কংগ্রেস সদস্য। কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ ও এর ধারাবাহিকতায় ছাত্র–জনতার আন্দোলনে বিনা উসকানিতে হামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেনকে দেওয়া এক চিঠিতে তারা এই আহ্বান জানান। খবর বাংলানিউজের।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত ৭ আগস্ট এই চিঠি লেখা হয়। চিঠিতে কংগ্রেসের উভয় কক্ষ তথা সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের ৬ সদস্য স্বাক্ষর করেন। তারা হলেন– লয়েড ডগেট, এডওয়ার্ড জে মার্কি, উইলিয়াম আর কিটিং, ক্রিস ভন হলেন, জেমস পি ম্যাকগভার্ন ও অল গ্রিন। ডেমোক্রেটিক পার্টির রাজনীতিক ও আইনপ্রণেতা লয়েড ডগেট তার এক্স অ্যাকাউন্টে চিঠিটির অনুলিপি প্রকাশ করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক সরকার সম্প্রতি দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত গুরুতর যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে, সেসব নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং সেই উদ্বেগ থেকে আমরা এই চিঠি লিখছি।
গত ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী (বিজিবি) মোতায়েন করে বাংলাদেশ সরকার। পরের সপ্তাহে সশস্ত্র বাহিনীও মোতায়েন করা হয়। মোতায়েনের পর থেকে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী আন্দোলন দমনে নির্বিচারে টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট ও একপর্যায়ে প্রাণঘাতি বুলেট ব্যবহার করেছে। এতে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি। এছাড়া বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে। গত বেশ কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বিরোধী মতামতকে দমন করে আসছে আওয়ামী লীগ এবং তারই সর্বোচ্চ উদাহরণ ছিল এসব কর্মকাণ্ড।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, যদিও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ক্ষমতাচ্যুত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের দায় কোনোভাবেই কম নয়। আন্দোলন দমনে তারা প্রথমে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ এবং পরে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছেন। গত ৪ আগস্ট ছিল সেই আন্দোলনের সর্বোচ্চ পর্যায়। সেদিন বাংলাদেশজুড়ে শতাধিক মানুষ নিহত হন।