এমপিদের আইনি সীমার বাইরের জমি বাজেয়াপ্ত চায় টিআইবি

সংস্থাটি বলেছে, ১৩ জন সংসদ সদস্যের সম্মিলিত জমি আইনি সীমার চেয়ে ৮০০ একর বেশি

| শুক্রবার , ১২ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৪:৩৫ পূর্বাহ্ণ

সংসদ সদস্যদের কারও অবৈধ আয় ও সম্পদ থাকলে তা যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় বাজেয়াপ্ত করে দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশটিআইবি। ১৩ জন সংসদ সদস্যের মালিকানায় আইনি সীমার বাইরে মোট ৮০০ একরের বেশি জমি আছে জানিয়ে সেগুলো ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণের আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি। গত ৭ জানুয়ারির ভোট শেষে নতুন মন্ত্রিসভার শপথের দিন গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এই আহ্বান জানানো হয়। খবর বিডিনিউজের।

ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে টিআইবি বলেছে, দেশের আইন (ল্যান্ড রিফর্ম অ্যাক্ট, ২০২৩) একজন ব্যক্তির ভূমির মালিকানার সর্বোচ্চ সীমা (কৃষি জমির ক্ষেত্রে ৬০ বিঘা এবং অকৃষি জমিসহ যা ১০০ বিঘা পর্যন্ত যেতে পারে) বেঁধে দিলেও ১৩ জন সংসদ সদস্যের কাছে আইনি সীমার বাইরে জমি আছে। একজন সংসদ সদস্য তার মালিকানায় ৩৮০.৭৫ একর জমি দেখিয়েছেন।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ২০২৪ নির্বাচনি ইশতেহারে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লিখিত অঙ্গীকারের যথার্থতার দৃষ্টান্ত হিসেবে সংসদ সদস্যদের অবৈধ আয় ও সম্পদ থাকলে তা যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় বাজেয়াপ্ত করাসহ দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। বিশেষ করে, আইনি সীমার বাইরে মোট বাড়তি ৮০০ একরের বেশি জমি বিধিবহির্ভূতভাবে সংসদ সদস্যদের অনেকের মালিকানাধীন রয়েছে, তা যথাযথ প্রক্রিয়ায় বাজেয়াপ্ত করে ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণের আহ্বান জানাই আমরা।

টিআইবি জানিয়েছে, হলফনামায় উল্লিখিত অস্থাবর সম্পদের মূল্যের ভিত্তিতে সংসদ সদস্যের প্রায় ৮৫ শতাংশই কোটিপতি। ১৫ জন সংসদ সদস্যের ১০০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যদের অস্থাবর সম্পদের সম্মিলিত মূল্য ২২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি।

টিআইবি জানায়, সবশেষ চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গড় অস্থাবর সম্পদের তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, দশম সংসদের তুলনায় একাদশ সংসদের সদস্যদের সম্পদ বেড়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তুলনায় সর্বশেষ ২০২৪ সালে বৃদ্ধির হারও প্রায় কাছাকাছি, ৭০ দশমিক ৪১ শতাংশ। বছরে এক কোটি বা তার বেশি টাকা আয় করেন এমন ১১২ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন এবারের সংসদে। সংসদ সদস্যদের ৩৮ শতাংশই এমন আয় করেন।

বছরে ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা আয় করেন ৫২ শতাংশ সংসদ সদস্য। নতুন সংসদ সদস্যদের ৬৫ শতাংশই ব্যবসায়ী, যা সবশেষ চারটি সংসদের মধ্যে সর্বোচ্চ। নবম জাতীয় সংসদে ৫৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ, দশম জাতীয় সংসদে ৫৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং একাদশ জাতীয় সংসদে ৬১ শতাংশ সংসদ সদস্য ছিলেন ব্যবসায়ী। বাংলাদেশের প্রথম সংসদের সদস্যদের মধ্যে ব্যবসায়ীর হার ছিল ১৮ শতাংশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহিউদ্দিন বাচ্চুর স্ত্রীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
পরবর্তী নিবন্ধকোর্ট হিলের প্রবেশমুখে ১৭ অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ