অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একমাত্র কাজ হচ্ছে একটি সাধারণ নির্বাচন দেওয়া এবং সেটা ডিসেম্বরের মধ্যেই দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, আপনি কি চান নির্বাচনের জন্য আপনার সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হোক? এ দেশের জনগণ যমুনামুখী লংমার্চ করুক? হুঁশিয়ার করে দিতে চাই প্রফেসর ড. ইউনূস সাহেব, আপনি বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব, সম্মানিতজন। আপনি সম্মানের সঙ্গে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করুন ডিসেম্বরের মধ্যে। যে কথা আপনি আমাদের দিয়েছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল শনিবার খুলনার সার্কিট হাউস ময়দানে ‘তারুণ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল এই সমাবেশের আয়োজন করে। খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মী সমাবেশে যোগ দেন।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংস্কার এবং বিচার একটি চলমান প্রক্রিয়া। যেটি চালু থাকবে, যারাই সরকারে আসুক। অনন্তকাল ধরে আপনি বিচার এবং সংস্কারের বাহানা দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে কণ্টকাকীর্ণ করবেন না। প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আপনার নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু মনে করবেন না, রোজ কেয়ামত পর্যন্ত আপনাদের আমরা এই জায়গায় দেখতে চাইব। এখন মানুষ আপনার সরকারকে বলছে, এনসিপি মার্কা সরকার। আপনার সরকারে এনসিপির দুজন প্রতিনিধি বিদ্যমান। তারা উপদেষ্টা, আবার এনসিপি সংগঠন করেন। যা ওপেন সিক্রেট। যদি আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে চান, তাহলে সেই এনসিপি মার্কা সেই দুজনকে পদত্যাগ করতে বলেন। যদি পদত্যাগ না করেন, আপনি বিদায় করুন।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, আপনার সরকারে একজন বিদেশি নাগরিককে আপনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করেছেন। সেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে আপনি বিদায় করুন। হয় তিনি নিজে পদত্যাগ করবেন, না হলে আপনি তাকে বিদায় করবেন। এ দেশের নিরাপত্তাসংক্রান্ত কোনো জাতীয় দায়িত্ব বিদেশি কোনো নাগরিকের হাতে থাকতে পারে না। এই নাগরিক ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশে একটি অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য। আমরা তা হতে দেব না।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি অবলীলাক্রমে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর, নদীবন্দর, করিডর সব বিদেশিদের কাছেন হস্তান্তর করবেন কী চুক্তি করে এসেছেন? কী এখতিয়ার আছে আপনার? কী ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছেন? আপনার একমাত্র ম্যান্ডেট বাংলাদেশে একটা সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। সুন্দর, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
তিনি বলেন, আমরা বলছিলাম, যথেষ্ট হয়েছে, নির্বাচনমুখী যেসব জরুরি সংস্কার করা দরকার, সেসব জরুরি সংস্কার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করে ডিসেম্বরের ভেতরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। আপনি আশ্বস্ত করেছিলেন আবার আপনি সরে গেলেন।