মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | বুধবার , ২০ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র কোরআন হলো আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নাজিলকৃত কিতাব। কোরআন আল্লাহর বাণী এবং মানবজাতির জীবন বিধান। এই মহান অনুগ্রহ মহানবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাজিল হয় মহাবরকতময় মাস রমজানে। মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, রমজান মাসে কোরআন নাজিল করা হয়েছে, এটি মানবজাতির হেদায়ত ও পথচলার নির্দেশিকা এবং সত্য-মিথ্যা পার্থক্য করার বিধান। (সূরা বাকারা :১৮৫)। এই আয়াত দ্বারা বুঝতে পারি, রমজান হলো কোরআনের মাস। কোরআনকে আত্মস্থ না করে শুধু শ্রদ্ধাভরে ঘরে সাজিয়ে রাখলে কোনো কল্যাণ নেই। আল্লাহর বাণী আত্মস্থ করে জীবনে বাস্তবায়ন করতে হবে।

পবিত্র কোরআনের সূরা কদরে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, আমি কদরের রাতে কোরআন নাজিল করেছি। আর কদরের রাত হলো রমজানে। মহানবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে কোরআন গবেষণা করতেন এবং অধিক সময় ব্যস্ত থাকতেন। রমজানের মর্যাদা শুধু কোরআনের কারণে নয়, অন্যান্য আসমানী কিতাবও রমজানে নাজিল হওয়ার কারণে এ মাসের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ৬ রমজান হযরত মুসা (আ.)’র ওপর তাওরাত, ১৩ রমজান হযরত ঈসা (আ.)’র ওপর ইঞ্জিল এবং ১৮ রমজান হযরত দাউদ (আ.)’র ওপর যাবুর কিতাব নাজিল হয়।

রমজান মাস যেহেতু আসমানী কিতাব নাজিলের মাস তাই এই মাসে কোরআন ও জ্ঞান বিজ্ঞান গবেষণা করার উত্তম সময়। কোরআন তেলওয়াত পূণ্যের কাজ কিন্তু পড়ার উদ্দেশ্য হলো বুঝে আমল করা। তাই কোরআনের অর্থ ও ব্যাখ্যা বুঝে পড়া অত্যন্ত জরুরি। না বুঝে কোরআন পড়লে কোরআনের হক আদায় হবে না। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, আমি তোমাদের নিকট যে কিতাব নাজিল করেছি তা অতি বরকতপূর্ণ। মানুষ যেন তার আয়াতসমূহ চিন্তা ভাবনা করে এবং জ্ঞানী লোকেরা যেন তার হতে শিক্ষা অর্জন করতে পারে। পবিত্র কোরআনের অর্থ ও রহস্য না বুঝে তেলওয়াত করা বদ্ধ জলাশয়ের মত।

কোরআনের ব্যাখ্যা ও তাৎপর্য আত্মস্থ করে অন্তরকে বহতা নদীর মতো প্রসারিত করতে হবে। প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম যে কোরআন শিখে ও শিক্ষা দেয়। (সহীহ বোখারী)। কোরআন অন্তরের চিকিৎসা ও আলোর পথ দেখায়। তাই কোরআনের মাস রমজানে কোরআন নিয়ে ব্যস্ত থাকা উচিত। এ মাসে হযরত ওসমান (র.), ইমাম মালেক (র.), ইমাম আবু হানিফা (র.), ইমাম শাফেয়ী (র.), ইমাম যোহরীসহ বড় বড় মুসলিম মনীষীগণ কোরআন নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতেন। মহান আল্লাহ পাক আমাদের কোরআনের মর্মার্থ বুঝার তৌফিক দান করুন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিটি কর্পোরেশনগুলোকে নিজেদের আয়ে চলতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধশতভাগ ব্যয় সরকারি তহবিল থেকে