দুই মাস আগে নগরীতে এক স্কুল শিক্ষকের বাসায় চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের বাসা থেকে চুরি করা মালামালের সঙ্গে মিলেছে ইয়াবাও। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার একজন শরীর চর্চায় বিশেষ পারদর্শী ও ফিটনেস প্রশিক্ষক। অপরজন চুরির পাশাপাশি ইয়াবার ব্যবসাও করেন। গত বুধবার রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চান্দগাঁও থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার দুইজন হলো– আব্দুল্লাহ আল হৃদয় ওরফে রিফাত (২২) এবং কামাল হোসাইন মুন্না (২৩)। তাদের বাড়ি কঙবাজার জেলায়। উভয়েই থাকেন বায়েজিদ বোস্তামি থানা এলাকায়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া চান্দগাঁও থানার এসআই মোমিনুল হাসান আজাদীকে জানান, গত ১৯ মার্চ চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার এ–ব্লকের এক নম্বর সড়কে স্কুল শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা বড়ুয়ার বাসায় দরজার তালা কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা তদন্তে নেমে পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে রবিন নামে এক যুবককে শনাক্ত করে গত ১৯ এপ্রিল গ্রেপ্তার করে। রবিন চুরির দায় স্বীকার করেন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হৃদয় ও মুন্নার নাম প্রকাশ করে। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর সিআরবি এলাকা থেকে হৃদয় এবং চান্দগাঁও মেহেরজান ঘাটা এলাকা থেকে মুন্নাকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেয়া তথ্যে নগরীর বালুচড়া এলাকায় মুন্নার বাসা থেকে দুই মাস আগে চুরি করা প্রায় এক ভরি ওজনের একটি সোনার বার ও চুরির কাজে ব্যবহার করা বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাসায় ৫০০ পিস ইয়াবাও পাওয়া যায়।
এসআই মোমিনুল বলেন, রবিন, হৃদয় ও মুন্না পরস্পর বন্ধু। তারা ভবঘুরে প্রকৃতির। সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন নির্জন আবাসিক এলাকায় ঘোরাঘুরি করে। যেসব ভবনের সামনে প্রহরী থাকে না, সেই ভবনে উঠে বাসা রেকি করে। বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দরজা দেখলে, দ্রুত তালা কেটে বাসায় ঢুকে হৃদয় ও মুন্না চুরি সংঘটিত করে। সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিটের মধ্যে চুরি সংঘটিত করে তারা দ্রুত ওই ভবন ছেড়ে যায়। চুরির সময় রবিন নিচে দাঁড়িয়ে পাহারা দেয়। তিনজনকে দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই যে তারা চুরির সঙ্গে জড়িত।
মুন্নার বিরুদ্ধে আরও একাধিক চুরির মামলা আছে। মাদক আইনেও চান্দগাঁও থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা আছে। হৃদয় নিয়মিত জিম করে। বিভিন্ন জিম সেন্টারে সে ট্রেইনার হিসেবে কাজ করে। গত মাসে সে ভারতে শরীরচর্চার একটি আন্তর্জাতিক আসরে অংশ নিয়ে স্বর্ণপদক লাভ করে বলে জানিয়েছে। দেশে ফিরে সেই স্বর্ণপদক বিক্রি করে দেয়। সে প্রাইভেট কার ভাড়া করে চলাফেরা করে। সঙ্গে থাকে মুন্না ও রবিন। হৃদয় আবার গানবাজনাও করে। তারা নিয়মিত ইয়াবাও সেবন করে। মুন্না ইয়াবার খুচরা বিক্রেতা। ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মাদক আইনেও মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তার হৃদয় ও মুন্নাকে চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসআই মোমিনুল হাসান।