কমলকুমার মজুমদার : স্বাতন্ত্র্যের সন্ধানী ঔপন্যাসিক

| মঙ্গলবার , ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৩০ পূর্বাহ্ণ

কমলকুমার মজুমদার (১৯১৪১৯৭৯)। সাহিত্যিক ও শিল্পী। বিংশ শতাব্দীর একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক যিনি আধুনিক বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে পরিগণিত। তাঁর প্রতিটি লেখায় স্বাতন্ত্র্যের সন্ধান মেলে। তাকে বলা হয় লেখকদের লেখক। তিনি ১৯১৪ সালের ১৬ নভেম্বর উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার, টাকি শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতার নাম প্রফুল্লকুমার মজুমদার ও মাতার নাম রেনুকাময়ী।

বাবা প্রফুল্লচন্দ্র ছিলেন পুলিশ অফিসার। মা ছিলেন বাড়ির সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের এক নিবেদিত প্রাণ। কমলকুমারের ছোটবেলাটা সেই সাংস্কৃতিক পারিবারিক আবহাওয়াতেই কেটেছে। ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী আর দুরন্ত ছিলেন কমলকুমার। ৭৮ বছর বয়সে কমলকুমার ও তাঁর ভাই নীরদ মজুমদারকে বিষ্টুপুর শিক্ষাসংঘে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে তাঁরা ছিলেন দুষ্টুর শিরোমণি। বাবার স্বাক্ষর নকল করে রোজ রোজ ছুটি নিতেন। ছাড়তে হলো স্কুল । তারপর ক্যাথিড্রাল মিশন স্কুল। সেখানেও সেই। রোজ রোজ বাবার নামে নিজে লিখে চিঠি দিত, স্কুল পালাত। তারপর সেটাও ছেড়ে ঢুকলেন ভবানীপুর টোলে। তারুণ্যের এসময়টা কমলকুমার ভ্রমণ, পত্রিকা সম্পাদনা, নাট্য পরিচালনা ইত্যাদিতে ব্যস্ত থাকেন। এসময়ই কাঁচা হাতে লাল জুতো, মধু, প্রিন্সেস ছোটগল্প রচনা করেন। কমলকুমার ১৯৪১ সালে এফ এ পাশ করেন এবং পরের বছর ১৯৪২ সালে কলিকাতায় আসেন কর্মানুসন্ধানে। কমলকুমার এ সময় নিজের শিল্পমাধ্যম স্থির করতে পারেন নি। চিত্রকলা, নাটক, সংগীত, সাহিত্য বিচিত্র মাধ্যমে বিচরণ করছেন। ১৯৪৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর গঠিত হয় ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিভিন্ন স্থানে কর্মরত ছিলেন।

উল্লেখযোগ্য ভাবে, বাংলা সরকারের জনগণনা বিভাগ, গ্রামীণ শিল্প ও কারুশিল্প, ললিতকলা একাডেমি এবং সাউথ পয়েন্ট স্কুলে। এছাড়াও তিনি ছবি, নাটক, কাঠের কাজ, ছোটদের আঁকা শেখানো, ব্যালেনৃত্যের পরিকল্পনা, চিত্রনাট্য রচনা করেন। বিভিন্ন পত্রিকায় তার লেখা সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। ১৯৬৯ সালে তার প্রথম গ্রন্থ অন্তর্জলি যাত্রাপ্রকাশিত হয়। ১৯৭০ সালে তার দ্বিতীয় গ্রন্থ নিম অন্নপূর্ণাপ্রকাশিত হয়। উল্লেখযোগ্য রচনাবলি: ‘অন্তজর্লী যাত্রা’, ‘গোলাপ সুন্দরী’, ‘অনিলা স্মরণে’, ‘শ্যামনৌকা’, ‘সুহাসিনীর পমেটম’, ‘পিঞ্জরে বসিয়া শুক’ ও ‘খেলার প্রতিভা’। তিনি ১৯৭৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম: জাতীয় সংসদে বিল পাস করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধশিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির চির যৌবনের উপাদান ‘ঘুড়ি’