ঘূর্ণিঝড় হামুন তাণ্ডবে কক্সবাজারে দুইজনের মৃত্যু

আজাদী অনলাইন | বুধবার , ২৫ অক্টোবর, ২০২৩ at ১২:৫৭ পূর্বাহ্ণ

ঘূর্ণিঝড় হামুন-এর তাণ্ডবে কক্সবাজারে দেয়াল ও গাছ চাপা পড়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান মঙ্গলবার রাত ১২টায় বলেন, “দু’জনের মধ্যে পৌর এলাকায় একজনের মৃত্যু হয়েছে দেয়াল চাপায়। আর মহেশখালী উপজেলায় গাছচাপায় একজনের মৃত্যুর খবর এসেছে।”

কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে দেয়াল ধসে যার মৃত্যু হয়েছে তার নাম আবদুল খালেক, বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর।

স্থানীয় কাউন্সিলর ওসমান সরওয়ার টিপু বলেন, “রাত ১০টার দিকে দেয়াল ধসে পড়েছিল। তাতে খালেক মারা যান। আমার ওয়ার্ডে প্রচুর গাছ ভেঙে পড়েছে, বিদ্যুতের খুঁটি বেঁকে গেছে, তার ছিঁড়ে গেছে। রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে গাছ পড়ে। কিছু বাড়িঘরও ক্ষতি হয়েছে।”

মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের মুন্সির ডেইল গ্রামে মারা গেছেন হারাধন নামের এক ব্যক্তি। তিনি গাছ চাপা পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান।

চকরিয়া উপজেলার বদরখালীতে আসকর আলী নামের আরেকজন গাছচাপায় মারা গেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এলেও বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি জেলা প্রশাসক।

তিনি বলেন, “আমরাও শুনেছি তবে এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি।”

একই কথা বলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান।

রাত সোয়া ১২টায় তিনি বলেন, “কক্সবাজারে দুইজন মারা গেছে, আমরা এটা নিশ্চিত হয়েছি। তাদের মধ্যে একজন সদরে আরেকজন মহেশখালীতে। স্থানীয় প্রশাসন তাদের নাম-পরিচয়ও পেয়েছে। আরেকজন মারা যাওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। তবে আমরা নিশ্চিত না হয়ে বলতে পারছি না।”

ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় হামুন। পরের কয়েক ঘণ্টায় মূলত কক্সবাজারের উপর এ ঝড়ের তাণ্ডব চলে। রাত ১০টার পর ঝড়ের শক্তি অনেকটা কমে আসে।

জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান বলেন, “ঝড়ে কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তবে গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ‘ব্যাপক আকারে’। অনেক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে, তার ছিঁড়ে গেছে। কক্সবাজার শহরে কোথাও বিদ্যুৎ নেই। যেহেতু প্রচুর বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে কাজেই সেগুলো পুরো পরীক্ষা না করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।”

কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও কক্সবাজার পৌরসভায় কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও সেন্টমার্টিন দ্বীপে তেমন কোনো ক্ষতির তথ্য আসেনি বলে জানান জেলা প্রশাসক।

তিনি বলেন, “গাছ পড়ে চকরিয়ার দিকে ঢাকা-কক্সবাজার সড়ক কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেটা চালু করা হয়েছে। রাস্তার প্রতিবন্ধকতাগুলো অপসারণ করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।”

জেলা প্রশাসক বলেন, “আমাদের ৫৭৬টি শেল্টার আছে। এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় ৯৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪০ হাজারের মতো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে যারা বাস করছে তাদের সরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বিপুল আনন্দ-উৎসাহে ত্রিনয়নীর দুর্গাপূজা পালিত
পরবর্তী নিবন্ধহামুন দুর্বল হয়ে পড়ায় কমেছে সংকেত