রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে গতকাল সকাল থেকে সারা দেশে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। রেলের বিকল্প হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ রেল রুটের যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে বিআরটিসির ৭টি বড় বাসে করে গুরুত্বপূর্ণ রেল রুটের যাত্রীদের দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিআরটিসির এই বাস সার্ভিস চালু থাকবে।
গত ২৭ জানুয়ারি সোমবার দিবাগত মধ্যরাতের পর থেকে দেশের সব রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, রেল স্টেশনের ভেতরে–বাইরে ট্রেনের অপেক্ষায় বসে আছেন অনেক যাত্রী। তাদের অনেকে ট্রেন চলাচল বন্ধের খবর জানতেন না। গতকাল চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন রুটে ১২টি আন্তঃনগর ট্রেনের মোট ৪ হাজারের বেশি টিকেট বিক্রি হয়েছিল বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। ১২টি আন্তঃনগরের বাইরে আরো ৩টি লোকাল এবং মেইল ট্রেন চলাচল করে।
রেল কর্মকর্তা এবং বিআরটিসি চট্টগ্রাম বাস ডিপোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন রুটে ক্রয়কৃত রেল টিকেটে যাত্রীরা বিআরটিসি বাস সার্ভিসের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারছেন। পাশাপাশি যারা কাউন্টার থেকে টিকেট নিয়েছেন তারা কাউন্টারে টিকেট ফেরত দিয়ে টাকা ফেরত নিতে পারবেন। আর যারা অনলাইনে টিকেট নিয়েছেন তারা অনলাইনে রিফান্ড রিকোয়েস্ট দিয়ে টাকা ফেরত নিতে পারবেন। যেসব ট্রেনের যাত্রা বাতিল হয়েছে সেসব ট্রেনের টিকেটের টাকা যাত্রীদের ফেরত দিচ্ছে রেলওয়ে। পাশাপাশি অনেককে বিআরটিসি বাসে করে যাতায়াত করতে দেখা গেছে।
আজ বুধবারও চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে বিআরটিসি বাস থাকবে বলে জানান বিআরটিসি চট্টগ্রাম বাস ডিপোর ম্যানেজার জুলফিকার আলী। তিনি আজাদীকে বলেন, সকাল থেকে আমরা চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ৭টি বাসে করে ঢাকা, সিলেট এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় সাড়ে ৪শর মতো যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে। সন্ধ্যায় আরো ২টি দ্বিতল বাস স্টেশনে এনেছি। এখন আমিও স্টেশনে আছি।
তিনি বলেন, সকাল থেকে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করছি। কয়েকটি রুটে বাস দিয়েছি রেলের সিডিউল অনুযায়ী। যাত্রীরা ট্রেনের টিকেট দিয়ে বাসে যেতে পারছেন। আমাদের আরও ২০টি গাড়ি প্রস্তুত আছে। রেলের সিডিউল অনুযায়ী গাড়িগুলো দিয়ে যাত্রী পরিবহন করা হবে। বিআরটিসির একটি দ্বিতল বাসে ৭৫ জন এবং একতলা বাসে ৪৫ জন যাত্রী পরিবহন করা যায়। বুধবার হয়তো ট্রেনযাত্রীদের আজকের মতো ভোগান্তি হবে না। স্টেশন ম্যানেজার এবং মাস্টারসহ অন্য কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক এবিএম কামরুজ্জামান বলেন, রেলওয়ের পক্ষ থেকে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে বিকল্প হিসেবে বিআরটিসির বাসের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া যাত্রী চাইলে টিকেট রিফান্ডের সুযোগ আছে। যারা কাউন্টার থেকে টিকেট নিয়েছেন তারা কাউন্টারে টিকেট ফেরত দিয়ে টাকা ফেরত নিতে পারবেন। আর যারা অনলাইনে টিকেট নিয়েছেন তারা অনলাইনে রিফান্ড রিকোয়েস্ট দিয়ে টাকা ফেরত নিতে পারবেন। যাত্রী ভোগান্তি কমাতে ও ট্রেন চলাচলের বিষয়ে রেলওয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি।