বিপিএলে সবচেয়ে সফল কুমিল্লা ভিক্টোয়িান্স। আগের নয় আসরে চারবার শিরোপা জিতেছে তারা। আগের চারবার ফাইনালে গিয়ে চারবারই জিতেছে শিরোপা। এবার পঞ্চমবারের মত গেল ফাইনালে। শুধু তাই নয় টানা তৃতীয়বারের মত ফাইনালে কুমিল্লা। আর সে সুবাদে হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের হাতছানি দলটির সামনে। যদিও ঢাকা তিনবার শিরোপা জেতাসহ পাঁচবার ফাইনালে খেলেছে। চারবার শিরোপা জেতার পাশাপাশি পঞ্চম শিরোপার সামনে দাঁড়িয়ে। গতকাল সোমবার হাই ভোল্টেজ প্রথম কোয়ালিফায়ারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৬ উইকেটে রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে পঞ্চমবারের মত ফাইনালে জায়গা করে নেয়। অবশ্য এই ম্যাচে রংপুর রাইডার্স হারলেও তাদেরও ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ রেেছ। তবে সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশালকে হারাতে হবে সাকিবের রংপুর রাইডার্সকে। এই ম্যাচে বিজয়ী দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফাইনালে লড়বে ১ মার্চ। গতকালের রংপুর–কুমিল্লা লড়াইটা হয়েছে ব্যাটারদের মধ্যে। রংপুরের জেমস নিশামের ঝড় পাত্তা পায়নি কুমিল্লার লিটন–হৃদয়ের ঝড়ের কাছে। এই দুজনের দুর্দান্ত ব্যাটিং বিশাল রান তাড়া করে ফাইনালে পৌঁছে দেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। হৃদয়–লিটনের ১৪৩ রানের জুটি ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দেয়। ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোয়িান্সের সামনে কোনদল– রংপুর রাইডার্স নাকি ফরচুন বরিশাল।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা ১০ রানে হারায় প্রথম উইকেট। ২৪ রানে বিদায় প্রথম তিন ব্যাটার। এরপর বিপর্যয় ঠেকালেন জেমস নিশাম। পাঁচ নাম্বারে ব্যাট করতে নামা নিশাম চতুর্থ উইকেটে মেহেদী হাসানকে নিয়ে যোগ করেন ৩৯ রান। ২২ রান করে ফিরেন মেহেদী। পঞ্চম উইকেটে নিকোলাস পুরানকে নিয়ে যোগ করেন আরো ৩৮ রান। ৯ বলে ১৪ রান করে ফিরেন পুরান। এরপর ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে থাকেন নিশাম। ষষ্ঠ উইকেটে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন নুরুল হাসান সোহানকে। এদুজন যোগ করেন ৫৩ রান। ২৪ বলে ৪টি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ৩০ রান করে ফিরেন সোহান। কিন্তু থামেনি নিশামের ঝড়। শেষ পর্যন্তও থামানো যায়নি। ১৮৫ রান সংগ্রহ করে রংপুর রাইডার্স। জেমস নিশাম মাত্র তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি তুলে নিতে পারেননি। অপরাজিত ছিলেন ৯৭ রানে। তার ৪৯ বলের ইনিংসটিতে ৮টি চার এবং ৭টি ছক্কা রয়েছে।
১৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই কুমিল্লা হারায় সুনিল নারিনকে। এরপর দলের হাল ধরেন লিটন এবং তাওহিদ হৃদয়। রংপুরের বোলারদের তুলোধুনো করে দ্বিতীয় উইকেটে ৮৯ বলে ১৪৩ রানের জুটি গড়ে দলকে মজবুত অবস্থানে নিয়ে যান এ দুজন। ৪৩ বলে ৬৪ রান করা তাওহিদ হৃদয়কে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আবু হায়দার রনি। হাফ সেঞ্চুরির ফলে এবারের বিপিএলে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে চারশ রান করলেন হৃদয়। ১৩ ইনিংসে তার রান ৪৩৯। ৪৪৩ রান করে তামিম ইকবাল সবার উপরে। এরপর জনসন চার্লস এসে যোগ দেন লিটনের সাথে। প্রথম দুই বলে একটি চার একটি ছক্কা মেরে তৃতীয় বলেই ফিরেন এই ক্যারিবীয়ান। সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত শতকটা ধরা হলোনা লিটনের। ফিরেছেন ৫৭ বলে ৮৩ রান করে। মেরেছেন ৯টি চার এবং ৪টি ছক্কা। লিটন ফিরলেও দল তখন জয়ের একেবারে কাছেই চলে যায়। মঈন আলি একটি চার একটি ছক্কা মেরে ৯ বল হাতে রেখে দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে এবং সে সাথে ফাইনালে। ৬ বলে ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন মঈন আলি। আগামীকাল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রংপুর এবং বরিশাল মুখোমুখি হবে।