সম্প্রতি স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় চন্দনাইশের দুর্গম পাহাড়ি জনপথ ধোপাছড়ি ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ইউনিয়নের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের দুটি সড়ক এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। দিয়াকুল–চিরিংঘাটা–ধোপাছড়ি–মংলারমুখ–রাঙ্গুনিয়া সড়ক ও খানহাট–ধোপাছড়ি–বান্দরবান সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ধসে পড়েছে পাহাড়। আবার সড়কের বেশ কয়েকটি অংশও ধসে পড়েছে পাহাড়ের গভীরে।
গতকাল শুক্রবার এ দুটি সড়ক পরিদর্শনে দেখা যায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ইউপি সদস্যরা স্থানীয়দের নিয়ে বন্যায় বিধ্বস্ত সড়ক দুটিতে যোগাযোগ সচল করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ সড়কে ধসে পড়া পাহাড়ের মাটি সরাচ্ছেন, কেউ কেউ সরাচ্ছেন গাছের গুড়ি, আবার কেউ কেউ সড়কে পড়া পলি মাটি সরাচ্ছেন। বন্যায় ধোপাছড়ি ইউনিয়নের রাস্তা–ঘাটসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে দুর্গম পাহাড়ি জনপথ ধোপাছড়ি ইউনিয়ন আরো ১০ বছর পিছিয়ে গেছে বলে মনে করছেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলীম। তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে বর্ষাকালে ধোপাছড়িতে যা ক্ষতিগ্রস্ত হতো বৃষ্টিপাতেই হতো। কিন্তু চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি পাহাড়ি ঢল শঙ্খনদ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় রূপ নেয়। এতে ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও অধিকাংশ সমতল ভূমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। ভেঙে যায় দুই শতাধিক মাটির ও কাঁচা বসতঘর। একই সাথে অস্বাভাবিক পাহাড় ধস ও দেখা গেছে বন্যার সময়। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধোপাছড়ির ইউনিয়নের সাথে সড়ক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম দিয়াকুল–চিরিংঘাটা–ধোপাছড়ি–মংলারমুখ–রাঙ্গুনিয়া সড়ক ও খানহাট–ধোপাছড়ি–বান্দরবান সড়ক। এ দুটি সড়কের মধ্যে খানহাট–ধোপাছড়ি–বান্দরবান সড়কটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন এবং দিয়াকুল–চিরিংঘাটা–ধোপাছড়ি–মংলারমুখ–রাঙ্গুনিয়া সড়কটি এলজিইডির আওতাধীন। সড়ক দুটিতে এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ধোপাছড়ির সাথে সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম সড়ক দুটি দ্রুত সংস্কার করে সচল করার জন্য স্ব–স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ধোপাছড়ির মানুষ এখন প্রাচীন আমলের নৌকাকেই যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে বেঁচে নিয়েছেন। প্রকৌশলী মুহাম্মাদ জুনাইদ আবছার চৌধুরী জানান, এলজিইডির আওতায় চন্দনাইশে সড়ক রয়েছে ৪০০ কিলোমিটার। এরমধ্যে উপজেলার দুটি পৌরসভা চন্দনাইশ ও দোহাজারী এবং ৮টি ইউনিয়ন কাঞ্চনাবাদ, জোয়ারা, হাশিমপুর, বৈলতলী, বরমা, বরকল, সাতবাড়িয়া ও দুর্গম ধোপাছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কের মধ্যে প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষত–বিক্ষত হয়ে পড়ে। উপড়ে গেছে কয়েকটি কালভার্ট। যা যানবাহন চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ কোটি টাকারও বেশি।