সব দলের অংশগ্রহণ চান সাবেক নির্বাচন কমিশনাররা

ইসিতে মতবিনিময়

| সোমবার , ১৩ জুন, ২০২২ at ৮:২০ পূর্বাহ্ণ

আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ চাইছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনাররা; সেজন্য বর্তমান নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ প্রত্যাশা করছেন তারা। কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন ইসি গতকাল রোববার সাংবিধানিক সংস্থাটির সাবেকদের মতবিনিময়ের জন্য ডাকলে তাদের কাছে এমন বক্তব্যই শোনেন তারা। খবর বিডিনিউজের।
আগামী সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব নিয়ে যাত্রা শুরুর পর হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, তারা কাউকে ‘জোর করে’ নির্বাচনে আনতে পারবেন না। তবে সংলাপে তাদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, সব দলকে ভোটে আনতে আরও উদ্যোগী ভূমিকাই নিতে হবে ইসিকে। দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি একাদশে এলেও এখন বলছে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তারা অংশ নেবে না।
এই প্রেক্ষাপটে গতকাল ইসির মতবিনিময় সভায় সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা বলেন, ‘আমাদের সময়ও বিএনপি ওয়াজ প্রোবলেমেটিক। অনেক সময় লাগছে আমাদের টেক দেয়ার কনফিডেন্স। আসতে চাননি, কিন্তু অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে। এখানে তো খুবই অ্যাডামেন্ট (অনড়) মনে হয়েছে, অন্তত যেসব কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছেন ওনারা কারেন্ট সিচুয়েশনে (নির্বাচনে) যেতে রাজি নেই।’ শামসুল হুদা বলেন, ‘এবারের ইলেকশনটায় সব দল যদি না আসে, এটা কিন্তু গ্রহণযোগ্য হবে না। সুতরাং কীভাবে আনবেন, এটা আপনাদের দেখতে হবে, আপনাদের পাওয়ার অব পারস্যুয়েশন, আপনারা কী অফার করবেন, এটার উপর নির্ভর করছে।’ ২০১৭-২০২২ সালে দায়িত্ব পালন করা সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘সকলের প্রত্যাশা সুষ্ঠু নির্বাচন। তবে এজন্য সব দলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন প্রয়োজন হবে।’ সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ‘নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা’ থাকা জরুরি।
তবে বর্তমান কমিশনের শুরুর ভূমিকার প্রশংসা করে শামসুল হুদা বলেন, ‘(ভোটে আনার) ওই রকম পরিবেশ কিছুটা সৃষ্টি করতে পারলে (বিএনপি) তারা আসবে নির্বাচনে, আমার ধারণা। এখন পর্যন্ত আপনাদের কথাবার্তা আচার-আচরণ দেখছি, এখনকার কার্যকলাপ নিয়ে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন করছে না।’
৯০ এর অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফেরার কালে সিইসির দায়িত্ব পালনকারী বিচারপতি আব্দুর রউফ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করেন। সেই সঙ্গে প্রতি ৫০০ ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্র করার প্রস্তাব রাখেন। তবে বিদ্যমান আইন-বিধিতে ভালো নির্বাচন সম্ভব মন্তব্য করে আইন সংস্কারে হাত না দেওয়ার পরামর্শ দেন শামসুল হুদা।
সাবেকদের সঙ্গে সংলাপ শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সবাই চান অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। ইনক্লুসিভ না হলে সে নির্বাচন বাস্তব অর্থে গ্রহণযোগ্য হবে না।’ আলোচকদের মতামত তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা বলেছেন- রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনেক নষ্ট হয়ে গেছে। এ ইতিবাচক গুণ বিশেষ করে পরম সহিষ্ণু, ঐকমত্য না থাকলে ইসির একার পক্ষে ভালো নির্বাচন সম্ভব হবে না। ভোটার, দল সবার মধ্যে সমঝোতা ও ঐকমত্য না থাকলে ভালো হবে না। বর্তমান আইনি ও সাংবিধানিক কাঠামোয় নির্বাচন করতে হবে বলে বলে যে পরামর্শ এসেছে, সে বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘ব্যক্তির চেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ হল সিস্টেম। সিস্টেম ভালো হলে যে কাউকে বসিয়ে দিলে মেশিনটি অনেক ভালো কাজ করবে।’
সাবেক সিইসি ও ইসির সঙ্গে আলাপ করলেও গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানান সিইসি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেই পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে চান তারা। তিনি বলেন, ঐকমত্য হয়নি। আমরা এখনও আলাপ করছি, শুনেছি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হবে। সহসাই এ সংলাপ শুরু করতে পারব আশা করি।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধজামান এক্সক্লুসিভকে লাখ টাকা জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধপটিয়ায় নৌকার প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ আজ