আমাদের শিশুরা আমাদের সম্পদ যাদের উপর জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। একজন শিশুকে সুন্দর একটি পরিবেশ দিতে পারলে তার বেড়ে উঠা অনেক আনন্দ নির্ভর হয়। ছোট বেলার চালচলন, আচার–আচরণ একজন শিশুর মস্তিষ্কে অনেক প্রভাব ফেলে। শিশুদের প্রতি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো প্রায় সময় নিজেদের বিবেক দংশন করে। যাঁদের হাতে শিশুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব, তাঁদের একটা বড় অংশই শিশু সুরক্ষার প্রতি সম্পূর্ণ অসচেতন, অনির্ভরযোগ্য, অনেক ক্ষেত্রে হয়তো বা অপরাধমনস্কও। শিশুদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার লক্ষ্যে জাতীয় শিশু অধিকার কমিশনের সুস্পষ্ট নির্দেশনামা রয়েছে। বিদ্যালয়ে ছাত্র–নিরাপত্তার বিষয়টি আঁটোসাঁটো করার জন্য কর্তৃপক্ষকে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তার সুনির্দিষ্ট তালিকাও রয়েছে দেশে। এই তালিকার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করতে হবে। শিশু সুরক্ষা বলতে আমরা বুঝি কোনো শিশু লাঞ্ছনা, অবহেলা বা বঞ্চনার শিকার হবে না, প্রতিটি শিশুর মৌলিক অধিকারগুলি যেমন যত্ন ও সুরক্ষা এবং ন্যায় বিচার সুরক্ষিত হবে এবং শিশুটি সামগ্রিকভাবে বিকাশ লাভ করবে। শিশুরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে যেমন– শিশু লাঞ্ছনা, দেহ ব্যবসায়ে শিশুকে যুক্ত করা, শিশু পাচার, শিশু শ্রম এবং ক্ষতিকর কিছু গতানুগতিক প্রথা যেমন: কন্যা ভ্রণ হত্যা, অপুষ্টি, পাচার, বাল্য বিবাহ ইত্যাদি। কিছু আপতকালীন পরিবেশে যেমন জরুরি অবস্থায়, যুদ্ধের সময়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এবং শারীরিকভাবে অক্ষম শিশুদের বিশেষ সুরক্ষার প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে নির্দিষ্ট কর্মসূচী গ্রহণ করা জরুরি প্রয়োজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দীর্ঘ সময় শিশুরা তার মা বাবার সাথে পরিবারে থাকে। প্রত্যেক পরিবার শিশুদের জন্য যেন এক একটি শিক্ষালয় হতে পারে তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পিছিয়ে পড়া এবং দুর্বল শ্রেণিগুলির জন্য বিশেষভাবে শিক্ষা প্রদানের জন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলে শিশুরা নিজেদের জীবনকে আরও বিকশিত করতে পারবে। তফশিলি জাতি, উপজাতি, হরিজন সম্প্রদায়ের ছেলে মেয়েরা যাতে আরও বেশি বিদ্যালয়মুখী হয় তার জন্য প্রেষণা প্রদান করতে হবে। আগামীতে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধ দেশ গঠনের জন্য আমাদের শিশুদের উন্নয়নের বিকল্প নাই। একটি সুস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, স্বাধীনভাবে, মর্যাদার সাথে বেড়ে ওঠার সকল রকম সুযোগ এবং সুবিধা পায় এবং শৈশব এবং কৈশোর যাতে সবরকমের অপব্যবহার এবং নৈতিক অবক্ষয় থেকে সুরক্ষিত থাকে সে প্রচেষ্টা নিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। অনাথ শিশুগুলোর দায়িত্ব রাষ্ট্র গ্রহণ করার মাধ্যমে তাদের নৈতিক শিক্ষার সমন্বয়ে আবাসিক সুবিধাসহ পাঠদানের ব্যবস্থা করলে ভালো। শিশুর জন্য বাসযোগ্য একটা পরিবেশ সৃষ্টি করা সবার দায়িত্ব।