সমুজ্জ্বল থাকুক প্রিয় আজাদী

শিপ্রা দাশ | মঙ্গলবার , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৬০ সালে প্রকাশের প্রথম দিন থেকেই। সূর্যোদয়ের আগে ,প্রার্থনারত পাখির কলকাকলি ধ্বনি প্রতিধ্বনি। মানুষকে জাগ্রত করার আয়োজনে কঠিন সত্য কে ভালবেসে। সমাজ-সংসারের দৈনন্দিন জীবন চক্রের সুখ- দুখ, আনন্দ -বেদনার, আন্তর্জাতিক -দেশীয় -আঞ্চলিক বিভিন্ন সংবাদ ও নানান প্রতিবেদন। গল্প, কবিতা, কৌতুক, ছোটদের পাতা আগামীদের আসর। ক্রীড়া, শিক্ষা সংস্কৃতি ও বিনোদন অঙ্গনের উপস্থাপন। এইসব সংবাদ অনুসন্ধানীয় কাজ করতে গিয়ে। আজাদীর এর হাত ধরে বহু লেখক ও সাংবাদিকের জন্ম হয়েছে । তখনকার মহকুমা শহর বান্দরবনে আমাদের বাস। আমার বুদ্ধি বিকাশের সময় থেকে দেখেছি। প্রতিদিন (বিশেষ কারণ ছাড়া) আমার বাবার বড় টেবিল এর উপর যত্নে ভাঁজ করে রাখা থাকতো আজাদী। বাবা রাতে বসে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পুরো আজাদী পড়তেন। পরিবারের সবাইকে শোনাতেন। সদ্য আজাদী পড়তে না পারার দুঃখটা বাবা সব সময় সহ্য করে নিতেন।পার্বত্য এলাকা হওয়ায় ১৯৭৬ সালেও বান্দরবান থেকে সকালে একটি বাস চট্টগ্রাম পৌছাতো, সেই বাসটিই দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা হতো। সন্ধ্যার পরে পৌঁছাতো বান্দরবান। সেই বাসেই আসতো পত্রিকা। সেই পত্রিকা বিলি হত পরদিন সকালে। কোন কারণে বাসে যান্ত্রিক ত্রুটি হয়ে সারাতে দেরি হলে দু-তিনদিন ও যান চলাচল বন্ধ থাকতো। ফলে বান্দরবান বাসি এ কয়দিন পত্রিকার মুখ দেখা থেকে বঞ্চিত হতো। বান্দরবানে “বিচিত্রা বিপনী” নামক একমাত্র প্রতিষ্ঠানটি ছিল আমার বাবার। যেখান থেকে দেশের প্রায় সব পত্রিকায় বিলি হত বান্দরবানে। স্বাধীন বাংলার প্রথম প্রকাশিত পত্রিকা লাল কালিতে জয় বাংলা লিখা আজাদী এখনো রাখা আছে পরম যত্নে। ষাট বৎসর অতিক্রম করে মানুষ ‘সিনিয়র সিটিজেন’ হয়। আজাদী ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ এ একষট্টি অতিক্রম করে বাষট্টিতে পড়লো। তবুও প্রতি সকালে নতুন আজাদী হাতে পেয়ে মনে হয় বাগানের নতুন ফল হাতে পেলাম। যুক্তিনিষ্ঠ, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, নিরপেক্ষ, সত্যানুসন্ধানী ও সৃজনশীল আজাদীর জন্য রইলো আন্তরিক ভালোবাসা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমার ভালোবাসায় আজাদী
পরবর্তী নিবন্ধঅভিনন্দন চট্টল গৌরব দৈনিক আজাদী