ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর করা ধর্ষণ মামলার আসামি নাজমুল হাসান সোহাগকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ থেকে স্নাতকোত্তর করা সোহাগ (২৮) ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ করেছিলেন তারই বিভাগের স্নাতকোত্তরের ওই ছাত্রী। বুধবার বিকেলে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার এলাকা থেকে সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে সোহাগতে আদালতে পাঠালে ঢাকা মহানগর হাকিম কনক কুমার বড়ুয়া তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, গতকাল (বুধবার) তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজকে (বৃহস্পতিবার) সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। খবর বিডিনিউজের।
ধর্ষণ ও তাতে সহযোগিতার অভিযোগ এনে গত ২১ সেপ্টেম্বর লালবাগ থানায় ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, নাজমুল হাসান সোহাগ ও নুরুল হক নূরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে একটা মামলা করেন ওই ছাত্রী। পরদিন ধর্ষণ ও সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে চরিত্র হননের অভিযোগ এনে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেন তিনি। এই মামলায়ও ওই ছয়জনকে আসামি করা হয়, তবে প্রধান আসামি করা হয় নাজমুল হাসান সোহাগকে।
মামলার অপর তিন আসামি হলেন- বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি মো. নাজমুল হুদা ও কর্মী আব্দুল্লাহিল বাকী (২৩)।
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, একই বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী হওয়ায় এই পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। সেই সম্পর্কের জের ধরে ৩ জানুয়ারি লালবাগের বাসায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন মামুন। তখন সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ তার পাশে দাঁড়ান। চিকিৎসায় সহায়তা করার পর মামুনকে খুঁজে পেতে সাহায্যের কথা বলে চাঁদপুরে নিয়ে ফেরার পথে নাজমুল সোহাগও লঞ্চের মধ্যে তাকে ধর্ষণ করেন। পরে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে তিনি নূরসহ তাদের অপর সহকর্মীদের কাছে গেলে প্রথমে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও পরে বাড়াবাড়ি করলে চরিত্রহননের ভয় দেখান।
মামলা দায়েরের ১৭ দিন পরেও আসামিদের কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় ৮ অক্টোবর রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন শুরু করেন ওই ছাত্রী। এরপর গত ১১ অক্টোবর মামলার দুই আসামি সাইফুল ইসলাম ও মো. নাজমুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুই দিনের রিমান্ড শেষে তারা এখন কারাগারে আছেন।