৪ বছরেও শেষ হলো না বিনাজুরী সড়কের কাজ

রাউজান প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৩ এপ্রিল, ২০২১ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

রাউজানের বিনাজুরীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়নের কাজ নিয়ে গত প্রায় ৪ বছর ফেলে রেখেছে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সড়কটি কাজ পূবালী ট্রেডার্স নামের ঠিকাদার নিজে না করে সাব ঠিকাদার নিয়োগ করেছে। জানা যায়, দীর্ঘ সময় ধরে কাজটি ফেলে রাখার পর গত বছর সাব ঠিকাদার সড়কটির কাপেটিং করার কাজে হাত দিলেও কিছুদিন পর কাজ ফেলে উধাও হয়ে যায়। এদিকে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পূবালী ট্রেডার্সের নামে সড়ক উন্নয়ন কাজ রয়েছে হলদিয়া ইউনিয়নের শহীদ জাফর সড়ক ভায়া বৃন্দাবন বাজার সড়কও। এ সড়কের কাজেও নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, রাউজানের বিনাজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রবিন্দ্রলাল চৌধুরীর মালিকানাধীন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পূবালী ট্রের্ডাস গত ২০১৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রকল্পের আওতায় বিনাজুরী ইউনিয়নের লেলেংগারা সড়ক উন্নয়নের কাজটির কার্যাদেশ পায়। এরপর সাব ঠিকাদার নিয়োগ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম বাচ্চুকে। বাচ্চু আবার কাজটি সম্পন্ন করতে চুক্তিবদ্ধ হয় রাঙ্গামাটির এক ঠিকাদার আবদুল লতিফের সাথে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আবদুল লতিফ কাজ নিয়ে গত বছর করোনার আগে কাজে হাত দেয়। সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা মেকাডেম করে উধাও হয়ে যায়। গত বছর থেকে সড়কটি এ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল থেকে জানা যায়- এ কাজের ব্যয় বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ৭৭ হাজার ৮শত ৫০ টাকা। মূল ঠিকাদার রবিন্দ্রলাল চৌধুরীর সাথে কথা বলে জানা যায় কাজটি তিনি বাচ্চুকে দিয়েছিলেন। তিনি ওই কাজের অংশিদার করেছিলেন আবদুল লতিফ নামের এক ব্যক্তিকে। কাজ তারাই ফেলে রেখেছে। বাচ্চুর অভিযোগ রবিন্দ্র চৌধুরীর সাথে প্রকল্পের টাকার লেনদেন নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হওয়ায় কাজটি পড়ে রয়েছে। আবদুল লতিফ বলেছেন, তিনি কাজটি করবেন না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন বাচ্চুকে। খবর নিয়ে জানা যায়- ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পূবালী ট্রেডার্সের নামে সড়ক উন্নয়ন কাজ রয়েছে হলদিয়া ইউনিয়নের শহীদ জাফর সড়ক ভায়া বৃন্দাবন বাজার সড়কও। এই সড়কটি ব্রীক সলিংয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন করার কথা। ১ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সড়কটির উন্নয়ন কাজও পূবালী ট্রেডার্স না করে সাব ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছে হলদিয়া ইউনিয়নের দুই আওয়ামীলীগ নেতা মাহবুল আলম ও রুনু ভট্টাচার্য্যকে। অভিযোগ উঠে, সাব ঠিকাদারগণ কাজ করছেন নিম্নমানের ইট দিয়ে। স্থানীয়দের কাছ থেকে এ সড়কের কাজে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ ও উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম স্থানীয় চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলামকে নিয়ে প্রকল্প কাজ দেখতে যান। উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করে তাঁরা নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগের সত্যতা পান। কাজের দায়িত্বে থাকা রুনু ভট্টাচার্য্য এ প্রসঙ্গে বলেন উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা ভুল করে কিছু ২নং ইট রাস্তায় লাগিয়েছিল। নজরে এলে ওগুলো উঠিয়ে ফেলা হয়।
এ বিষয়ে রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, হলদিয়ায় সড়ক উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত নিম্নমানের ইট দ্রুত সরিয়ে নিয়ে সিডিউল মোতাবেক ১নং ইট ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিনাজুরীর লেলাংগারা সড়কটির বিষয়ে তিনি বলেন, কাজ সম্পন্ন না করায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বার বার নোটিশ দেয়া হয়েছে। দ্রুততার সাথে কাজ শেষ না করলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মাঝে ক্লিফটন গ্রুপের মাস্ক বিতরণ
পরবর্তী নিবন্ধতিন দাবিতে আইডিইবির ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভা