ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা এস এম আসলাম তালুকদার মান্না। ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে ভক্তদের হৃদয় ভেঙে চিরবিদায় নেন তিনি। কিংবদন্তীতুল্য এ নায়কের মৃত্যুর জন্য পরিবার দায়ী করেছেন চিকিৎসকের অবহেলাকে। এই অভিযোগে একটি মামলাও হয়েছে।
১৪ বছর আগে বিচার শুরু হলেও উচ্চ আদালতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় কোনো সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় নায়ক মান্নার। বুকে ব্যথা নিয়ে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
মান্নার মৃত্যুতে কয়েকজন চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ এনে ২০০৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে একটি মামলা করেন তার স্ত্রী শেলী কাদেরের ভাই রেজা কাদের। মামলার আর্জিতে বলা হয়, বুকে ব্যথা অনুভব করায় ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোর চারটায় মান্না হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু চিকিৎসকরা হাসপাতালে আসেন সকাল ৯টায়।
চিকিৎসা দেরিতে শুরু হওয়ায় ‘অ্যাকিউট মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশনে’ আক্রান্ত হন তিনি। এই রোগের ক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার ৯০ মিনিটের মধ্যে রোগীকে নির্দিষ্ট ইনজেকশন দিতে হয়। কিন্তু মান্নাকে ইনজেকশন দেওয়া হয় আক্রান্ত হওয়ার ৫ ঘণ্টা পর। হৃদরোগ বিভাগের ওই ৬ চিকিৎসকদের এমন অবহেলায় মান্নার মৃত্যু হয়। খবর বাংলানিউজের।
ওই বছর ১৩ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান সিদ্দিক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাই ২০০৯ সালের ২৮ জানুয়ারি আদালত ছয় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
পরে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাদের আট সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন। ওই বছরের ১৬ মার্চ চিকিৎসকরা আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত ৫০ হাজার টাকা বন্ডে তাদের জামিন দেন। এরপর ২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর ওই ছয় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত–১ এর বিচারক ফিরোজ আলম।
এরপর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন রাখা হলেও অভিযোগ গঠনের বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্টে যায় আসামিপক্ষ। হাইকোর্ট ওই বছরই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন। পরবর্তীতে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ায় দীর্ঘ ১৪ বছরেও এই মামলায় কোনো সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। মামলার বিষয়ে বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর হোসেন (দুলাল) বলেন, এই মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত আছে। তাই দীর্ঘ ১৪ বছরেও কোনো সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়নি। সাক্ষ্য নিতে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রস্তুত আছি। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলেই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।