স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য তরুণদের চিন্তায় পরিবর্তন দরকার

বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনায় ভূমিমন্ত্রী

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য তরুণদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, আগামীর বাংলাদেশটা হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। এই স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য এখনকার তরুণদের প্রস্ততি নিতে হবে। এজন্য তরুণদের চিন্তাচেতনায় পরিবর্তন আনতে হবে। তরুণদের তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে সুস্থ ধারার প্রতিযোগিতা থাকতে হবে। গতকাল শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রেডিসন ব্লু’র মোহনা হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ১ হাজার ৫১১ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধিত করা হয়।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটি সুন্দর, পরিচ্ছন্ন চিন্তাচেতনার মধ্যে এদেশকে গড়ছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের ডাক দিয়েছিলেন। সেটা এখন বাস্তব। এখন স্মার্ট বাংলাদেশের ডাক দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের মাথায় ঢোকাচ্ছেন, আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে? জাতির জনকের স্বপ্ন ছিল, এদেশকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত করা, বাঙালি জাতিকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দেওয়া, দারিদ্রমুক্ত করা এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে তিনি এদেশকে মুক্ত করেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশকে আবার পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করেছিল। দীর্ঘ ২১ বছর বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এই দেশে গণতন্ত্রের জন্য রাজপথে সংগ্রাম করেছেন। আজকে তোমরা অনেক বেশি সৌভাগ্যবান।

এই বাংলাদেশ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে আধুনিক, দারিদ্রমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছেন। এখন তোমরা স্মার্ট বাংলাদেশের সহযাত্রী। সাম্প্রতিককালে তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে মন্তব্য করে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ইদানীং দেখছি সামান্য কিছু হলেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা বাড়ছে। আমাদের এটা নিয়ে ভাবতে হবে। তরুণদের জীবনবোধ শিক্ষা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের বলতে চাই, তোমরা ফ্যামিলি ভ্যালু বোঝার চেষ্টা করবে। মাবাবার কথা ভাববে। একজন সন্তানকে জন্ম দেয়া, বড় করা অনেক কষ্টের ব্যাপার। তোমরা যখন মাবাবা হবে বুঝবে। আর শুধু বইয়ে মুখ গুঁজে থাকলেও চলবে না। পরিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। তরুণদের পারিবারিক মূল্যবোধ আর বাঙালিয়ানা চর্চায় জোর দিতে হবে। পাশাপাশি তাদের মধ্যে অতিরিক্ত প্রতিযোগিতার চাপ তৈরি না করে সময়ের সাথে নিজেকে গড়ে তোলার পরিবেশ করে দিতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে ওয়েস্টার্ন কালচার ফলো করার একটা প্রবণতা বাড়ছে। ওয়েস্টার্ন কান্ট্রিগুলোতে কিন্তু ফ্যামিলি ভ্যালু আমাদের মতো না। আমাদের একটা কালচারাল ঐতিহ্য আছে। আমরা সবই জানব, অনুসরণও করব। কিন্তু আমাদের যে বাঙালিয়ানা সেটাকে ধারণ করব, চর্চা করব। আজকে যারা জিপিএ৫ পেয়েছে তাদের সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে। এর মানে এই নয় যে, যারা পায়নি তাদের দিয়ে কিছু হবে না। কারো সাথে তুলনা করে নিজের অবস্থান নিয়ে মন খারাপ করা যাবে না। ওর এটা আছে, আমার কেন নেইএভাবে ভাবা যাবে না। ভাবতে হবে আমার এমন হতে হবে। আমি সময়ের সাথে সাথে সেজন্য নিজেকে গড়ে তুলব।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চট্টগ্রাম মহানগরের উপদেষ্টা সীমনি শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি মোহাম্মদ ইমরান। তিনি বলেন, তোমরা যারা জিপিএ৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থী, তোমরা দেশের ভবিষ্যৎ। তোমাদের মেধার উপর নির্ভর করছে আগামীর বাংলাদেশ। তোমাদেরকে একটি কথা মনে রাখতে হবে, আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। জাতির জনকের অসমাপ্ত কাজ আজকে তাঁর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সম্পন্ন করেছেন।

ভূমিমন্ত্রীর প্রশংসা করে মোহাম্মদ ইমরান বলেন, আজকের প্রধান অতিথি ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীও এক সময় তোমাদের মতো ছাত্র ছিলেন। নিষ্ঠার সাথে লেখাপড়া শেষ করে তিনি তার দক্ষতাসততা ও আন্তরিকতার গুণে আজকের এই পর্যায়ে এসেছেন। আজকে সারা দেশে তার মন্ত্রণালয়ের সুনাম আছে। তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়কে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলেছেন। তোমরা যারা এখন ছাত্র তোমাদের মধ্যেও এমন ভিশন থাকতে হবে।

মহানগর বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সভাপতি সাজ্জাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী ডেইজি সারোয়ার, চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, কঙবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরোয়ার কাবেরী, সংগঠনের উপদেষ্টা মো. ইমরান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান জাহাঙ্গীর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সদস্য আরিফুর রহমান, আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য জাহেদুর রহমান সোহেল, প্রাক্তন ছাত্রনেতা একরাম চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাওয়াদ চৌধুরী।

উপস্থিত ছিলেন কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সোলায়মান, ইউপি চেয়ারম্যান কাইয়ুম শাহ, অ্যাডভোকেট প্রকৃতি চৌধুরী ছোটন, আতাউর রহমান ও দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জায়িদ বিন কাশেম। কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুভূতি প্রকাশ করেন মুমতাহিনা তাবাসসুম মালিহা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচমেকে চিকিৎসাধীন তরুণের মৃত্যু, মামলা
পরবর্তী নিবন্ধলবণ পানিতে পিচ্ছিল সড়কে মোটরবাইক দুর্ঘটনা