স্বপ্নযাত্রী অবসর পাঠাগার

সাফায়েত রায়হান শিহাব | শনিবার , ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:৪৩ পূর্বাহ্ণ

অবসরে পড়ি বই, আলোকিত মানুষ হই’ এই স্লোগানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবসর পাঠাগার স্থাপন করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্নযাত্রী ফাউন্ডেশন’। প্রবাদ আছে বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না। বই অজানাকে জানায়, অচেনাকে চেনায় এবং অদেখাকে দেখায়। রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষ বাসযোগে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেন। এই সময়টা মোবাইল ফোনে বা অন্য কোনোভাবে নষ্ট না করে যদি বই পড়ে কাটানো যায়, তাহলে কেমন হয়! অপেক্ষমাণ বা অবসরকালীন এ সময়টা মোবাইল ফোনে বিভিন্ন চ্যাটিং কিংবা ব্রাউজিং না করে কিংবা অন্য কোনোভাবে সময় নষ্ট না করে যদি বই পড়ে কাটানো যায় তবে মূল্যবান সময়টুকু সার্থক হবে। ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের এই সময়ে আমরা বই থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছি। অপেক্ষার সময়ে সেবা প্রার্থীরা বই পড়লে সমাজ বইমুখী হবে। প্রায় ৪ বছর ধরে বাস কাউন্টারে যাত্রীদের জন্য পাঠাগার গড়ে তোলার কাজ করছে স্বপ্নযাত্রী পাঠাগার অপারেশন টিম। ২০২০ সালে প্রথম রাঙামাটিতে পাহাড়িকা বাস কাউন্টারে অবসর পাঠাগার চালু হয়। পাঠাগার অপারেশন টিমের পরিচালনায় এই পর্যন্ত বিভিন্ন বাস কাউন্টার, সেলুন এবং ইউনিয়ন পরিষদে ১৪ টি অবসর পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। তৎমধ্যে চট্টগ্রামের দামপাড়াস্থ সোহাগ বাস কাউন্টার, সৌদিয়া এসি বাস কাউন্টার, শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন মারছা বাস কাউন্টার, চান্দগাঁও থানাস্থ পূরবী বাস কাউন্টার, সিনেমা প্যালেস্থ সৌদিয়া বাস কাউন্টার, ঢাকার রাজারবাগস্থ গ্রীণ লাইন বাস কাউন্টার, রাঙ্গামাটির বনরুপাস্থ পাহাড়িকা বাস কাউন্টার, রিজার্ভ বাজারস্থ পাহাড়িকা কাউন্টারে, রাঙ্গুনিয়া সেলুনে ১টি, কুতুবদিয়া বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদে ১টি, নারায়ণগঞ্জে সেলুনে ১টি, লালমনিরহাট পৌর শপিং কমপ্লেক্সে ১টি, আনোয়ারা কার্যালয়ে ১টি এবং কর্ণফুলী সেলুনে ১টি অবসর পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়। বাস কাউন্টারের পরিধি অনুযায়ী পাঠাগারের কলেবর নির্ধারণ করা হয়। ছোট কাউন্টারের জন্য থাকে বইয়ের ছোট শেলফ এবং বড় কাউন্টারের জন্য থাকে বড় আকারের শেলফ। ছোট পাঠাগারে ২০০ থেকে ২৫০, আবার বড় পাঠাগারে সাধারণত ৩০০ থেকে ৪০০ বই থাকে। এই কাজে উৎসাহ দিতে আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। সংগঠনের উপদেষ্টা এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা পাঠাগার চালু করতে আর্থিকভাবে সহযোগিতা প্রদান করছেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসসংবলিত বই, বঙ্গবন্ধুর জীবনী, উপন্যাস, গল্পের বই, কাব্যগ্রন্থ, সায়েন্স ফিকশন, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনি, শিশুতোষ গল্পের বই দিয়ে সমৃদ্ধ করা হয়েছে এসব পাঠাগার। বিভিন্ন প্রকাশনী, লেখক, স্বেচ্ছাসেবী, শুভাকাঙ্ক্ষী থেকে বই কালেকশন করা হয়। তাছাড়াও ফেইসবুক পোস্টের মাধ্যমে আমরা বই কালেকশন করি। পাঠকদের পদচারণে মুখর থাকে এসব পাঠাগার। কিছু পাঠক এসব পাঠাগারে বই উপহার দেয়। আপনার বাসায় অলস পড়ে থাকা বইটি দিয়ে আপনিও সমৃদ্ধ করতে পারেন পাঠাগারগুলো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজনগণের মানসিকতা উন্নত হতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধরঙ্গবতীর ভালোবাসা চায়