সেই অস্ত্রাগার হচ্ছে জাদুঘর চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের স্মৃতি

| রবিবার , ৩ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:২২ পূর্বাহ্ণ

মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা যে অস্ত্রাগার দখলে নিয়ে ব্রিটিশ শাসকদের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেই অস্ত্রাগার সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই অস্ত্রাগারের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এ উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। খবর বিডিনিউজের।
নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনসে তৎকালীন ব্রিটিশ পুলিশের অস্ত্রাগার ও ব্যারাক সংরক্ষণ করে তৈরি হচ্ছে ‘বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, চট্টগ্রাম’। যেখানে স্থান পাবে ১৯৩০ সালে চট্টগ্রামের যুব বিদ্রোহ থেকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে এ জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত করার আশা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার সালেহ্‌ মোহাম্মদ তানভীর। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৯৩০ থেকে ১৯৭১ এর মেলবন্ধন ঘটানো হবে এই জাদুঘরে। চট্টগ্রামের মানুষ হয়েও মাস্টারদা সূর্য সেন এখানে ততটা আলোচিত নন, যতটা কলকাতায়। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম জানুক, আমাদের গর্ব করার মতো একটা ইতিহাস ঐতিহ্য আছে।
সিএমপির কর্মকর্তারা জানান, পুরনো অস্ত্রাগারের আদল ঠিক রেখেই সংস্কার করা হচ্ছে। এর সাথে যুক্ত করা হচ্ছে তৎকালীন পুলিশ ব্যারাকটিও। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে বিপ্লবীদের ভূমিকা জনগণের কাছে তুলে ধরতে সে জাদুঘরে মাস্টারদার ফাঁসির মঞ্চের আদলে একটি রেপ্লিকা তৈরি করা হবে; রাখা হবে বিপ্লবীদের ছবি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদ্যদের ভূমিকার কথাও সংরক্ষণ করা হবে এ জাদুঘরে।
সিএমপি কমিশনার বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পুলিশ বাহিনীর যে ৮১ জন সদস্য চট্টগ্রামে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তার ইতিহাসও তুলে ধরা হবে। জাদুঘরের সীমানা প্রাচীরে ৮১ পুলিশ সদস্যের নাম লেখা থাকবে। পাশাপাশি নতুন করে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির পরিকল্পনাও আছে। এ জাদুঘরে একটি বঙ্গবন্ধু কর্নার থাকবে, যেখানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের চট্টগ্রামের অংশটির পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মারক ও তথ্য ও চিত্র থাকবে। এ জাদুঘরে ভিডিও গ্যালারি রাখার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, এখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রদর্শনী করার ইচ্ছে আছে আমাদের। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত আমন্ত্রণ জানানো হবে।
জাদুঘরের পক্ষ থেকে মাস্টারদার জীবনী নিয়ে ইতিহাসভিত্তিক একটি বই প্রকাশের পরিকল্পনা জানিয়ে তিনি বলেন, এটা স্কুল শিক্ষার্থীদের ইতিহাস সম্পর্কে পরিচিত করবে।
১৬ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এ জাদুঘরে তৎকালীন ব্রিটিশ স্থাপত্য ঠিক রেখেই সংস্কারের কাজ চলছে। তবে পুলিশ ব্যারাকের পেছনে একটি স্থাপনা তৈরি করে এর আকার বাড়ানো হচ্ছে। জাদুঘরটি উন্মুক্ত থাকবে সবার জন্য। তবে প্রবেশ ফি দিয়ে ঢুকতে হবে। পুলিশ লাইনসের ফটকের পাশে আলাদা একটি ফটক তৈরি করা হচ্ছে দর্শনার্থীদের জন্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিরপেক্ষ সরকার না হলে নির্বাচনে যাব না : ফখরুল
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে দুই মাসে দুর্ঘটনায় নিহত ২৪