সংঘর্ষের ঘটনায় প্রতিবেদন জমা তদন্তে ১৬ বহিরাগত চিহ্নিত

চমেক হাসপাতাল ।। ব্যবস্থা নিতে পুলিশ প্রশাসনকে চিঠি

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৭ মে, ২০২১ at ৪:৫২ পূর্বাহ্ণ

গত ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ক্যাম্পাসে সংঘটিত দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। সংঘর্ষে চমেক শিক্ষার্থী-চিকিৎসক ছাড়াও বহিরাগত ১৬ জন জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে কমিটি। বহিরাগতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর কর্তৃক ৫ মে স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিরাগত ১৬ জনের তালিকাও সংযুক্ত করে পাঠানো হয়েছে। চমেক হাসপাতাল পরিচালক আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল প্রশাসন সূত্র জানায়, ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করেছে তদন্ত কমিটি। সংঘর্ষ-মারামারিতে শিক্ষার্থী-চিকিৎসকের পাশাপাশি উভয় পক্ষের বহিরাগত ১৬ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ৫ মে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে একাধিক সুপারিশ করেছে কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশ প্রশাসনকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিটির অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে হাসপাতাল ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে নিরাপত্তা জোরদারসহ বেশকয়টি বিষয়ে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও জানান হাসপাতাল পরিচালক।
প্রসঙ্গত, কথা কাটাকাটির জের ধরে ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যার পর থেকে চমেক ক্যাম্পাসে ও ছাত্রাবাসে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে দুজন চিকিৎসকসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হন। সংঘর্ষে জড়িত দুই গ্রুপের একটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী এবং অপর পক্ষ সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এই দুই নেতার অনুসারীদের মাঝে সামপ্রতিক সময়ে আরো বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
২৭ এপ্রিল রাতের ঘটনায় পরদিন সকাল থেকেই কোন ধরণের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কর্মবিরতি পালন শুরু করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ নিয়ে ওইদিন (২৮ এপ্রিল) দুপুরে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসে চমেক হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে ঘটনা তদন্তে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনসহ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে কর্তৃপক্ষের এসব সিদ্ধান্তের পরও কর্মবিরতি অব্যাহত রাখেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা। সংঘর্ষের ঘটনায় ২৯ এপ্রিল পাঁচলাইশ থানায় উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে। একটি মামলা করেন চমেক ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান। হাবিবুর রহমান সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অপর মামলাটি করেন চমেক শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম জয়। রিয়াজুল ইসলাম শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেফাজত নেতা নোমান ফয়েজীও বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আরও ৪ জনের মৃত্যু