শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ রেখে হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের নির্দেশ

সংকট নেই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

| বুধবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:৫৮ পূর্বাহ্ণ

দেশে করোনা সংক্রমণ চলাকালীন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে অক্সিজেনের ব্যবহার ও সরবরাহ বন্ধ রেখে শুধু হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে বিস্ফোরক অধিদপ্তর। দেশের পাঁচটি অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে দেশে অক্সিজেনের সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। খবর বাংলা/বিডিনিউজের।
সমপ্রতি প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ এক চিঠিতে শিল্পে ব্যবহারের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে বিকল্প হিসেবে সিঙ্গাপুর থেকে অক্সিজেন আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে, যা সময় সাপেক্ষ।
চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ সমপ্রতি দ্রুত বাড়ছে। দেশের হাসপাতাল/ক্লিনিকে করোনা ভাইরাসে মারাত্মক আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন হ্রাসের কারণে দ্রুত মেডিক্যাল গ্রেডের অক্সিজেন সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। এ পরিস্থিতিতে হাসপাতাল/ক্লিনিকে চাহিদা অনুসারে মেডিক্যাল অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে মেডিক্যাল অক্সিজেন উৎপাদন বাড়ানো এবং হাসপাতালে নিরবচ্ছিন্নভাবে অক্সিজেন সরবরাহ বজায় রাখা প্রয়োজন। তাই দেশে করোনা সংক্রমণ চলাকালীন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে অক্সিজেন ব্যবহার বন্ধ রেখে শুধু হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের নির্দেশনা দেওয়া হলো।
দেশের পাঁচটি অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- লিন্ডে বাংলাদেশ, স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেড, ইসলাম অক্সিজেন লিমিটেড, ডিআর ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও মেসার্স বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস লিমিটেড। দেশের মোট অক্সিজেন চাহিদার বড় একটি অংশ আসে ভারত থেকে। কিন্তু দেশটিতে করোনা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থায় অক্সিজেন রপ্তানি ও সরবরাহ এখন বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন হাসপাতালে এরইমধ্যে সংকট তৈরি হয়েছে। এ সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশে অক্সিজেনের সংকট হবে না: এদিকে হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাসের যে পরিমাণ রোগী আছে তাতে অক্সিজেনের সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ মালেক বলেন, হাসপাতালগুলোতে যে পরিমাণ রোগী আছে তাতে অক্সিজেনের সমস্যা হবে না। রোগী কমে যাওয়ায় অক্সিজেনের চাহিদাও কমে গেছে। রোগী যাতে না বাড়ে, সেভাবেই চলতে হবে। রোগী বেড়ে গেলে সঙ্কট তৈরি হবে। রোগী যদি সাত হাজারের জায়গায় একুশ হাজার হয় তাহলে সঙ্কট হবে। যে কোনো দেশেই সঙ্কট হবে। আমেরিকাতে হয়েছে, ইউরোপে হয়েছে, ভারতের পরিস্থিতি তো আপনারা দেখছেনই।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে দৈনিক লিকুইড অক্সিজেনের উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ১৫০ টনের মতো। এছাড়া সরবরাহ লাইনের গ্যাস থেকে অক্সিজেন উৎপাদন হয় ২০০ টনের মতো। দেশের হাসপাতালগুলোয় দৈনিক একশ থেকে দেড়শো টন অক্সিজেন লাগছে।
আমরা ভালো পজিশনে আছি। অতিরিক্ত যদি কিছু না হয় তাহলে অক্সিজেনের সমস্যা হবে না। যে অক্সিজেন অন্যান্য শিল্প কারখানায় দিত ৪০ টন সেটাও আমরা আমাদের জন্য বুকিং দিয়ে রেখেছি। কখনও যদি প্রয়োজন পড়ে আমরা সেই ৪০ টনও নিয়ে নেব। আমরা আমাদের রোগীদের জন্য ব্যবহার করব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেফাজতের ৩১৩ অর্থদাতা চিহ্নিত ।। মামুনুলের অ্যাকাউন্টে ৬ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধ১১ দিন পর মৃত্যুশূন্য চট্টগ্রাম