রেল ও বাস স্টেশন সুনসান

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১১ মে, ২০২১ at ৪:০৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম থেকে ঈদযাত্রা মানেই রেল স্টেশন ও বাস টার্মিনালগুলোতে উপচে পড়া ভিড়, আর হাজারো মানুষের অপেক্ষা। তবে এবারের চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। গতকাল চট্টগ্রাম রেল স্টেশন, দামপাড়া দূরপাল্লার বাস কাউন্টার এবং কদমতলী বাস স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে সুনসান নিরবতা। টার্মিনালের ভেতরে বাসগুলো পড়ে আছে, কোথাও যাওয়ার যেন তাড়া নেই। কর্মীরা বেঞ্চে বসে মোবাইলে লুড়ু খেলছেন। একই অবস্থা দেখা গেছে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনেও।
তবে নগরী থেকে আন্তঃজেলার প্রবেশ পথ- সিটি গেট, কর্ণফুলী সেতু এলাকায় যেতেই দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। সিটি গেট ও কর্ণফুলী সেতু এলাকায় হাজারো মানুষের স্রোত; কেউ গাড়িতে চড়ে, কেউ ব্যাগ বয়ে চলছেন পায়ে হেঁটে। একই রকম ভিড় দেখা গেছে অঙিজেন মোড়েও। ফটিকছড়ির বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম জানান, পরিবার নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। এখানে মানুষের স্রোত। অসংখ্য যাত্রী। রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি জেলার বাস স্টেশনও এই এলাকায়। এই কারণে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেশি। কর্ণফুলী সেতুর শহর অংশে দেখা গেছে, শত শত ছোট-বড় বাস দঁাঁড়িয়ে যাত্রী নিচ্ছে। বাসে স্থান না হওয়ায় ট্রাকেও চড়ছেন মানুষ। সেতুর শহর অংশের এক পাশে ট্রাক থামিয়ে যাত্রী তুলছিলেন চালক ও সহকারী। যাবেন কোথায় জিজ্ঞেস করতেই সহকারী এগিয়ে এসে বললেন, ‘চন্দনাইশ দেড়শ টাকা, সাতকানিয়া দুইশ টাকা। আমার চাইতে কম আর পাইবেন না।’
অন্যদিকে সিটি গেইট এলাকায় পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন যে জনস্রোত তাদের বেশির ভাগের গন্তব্য ফেনী, নোয়াখালী, (বসুরহাট, কোম্পানীগঞ্জ), লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জেলায়।
প্রতি বছর ঈদ আসলেই সারাদেশের মতো চট্টগ্রামে বসবাসরত দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের মধ্যে শুরু হয় বাড়ি ফেরার তাড়া। অন্যান্য বছরের মতো এবারও রেলওয়ে এবং বাস কাউন্টারগুলোতে ঈদের প্রস্তুতি নেই। গত বছরও করোনা মহামারীর কারণে ঈদে যাত্রী পরিবহন করেনি রেলওয়ে এবং দূরপাল্লার বাসগুলো।
আগে ট্রেনের টিকেটের জন্য চট্টগ্রাম রেল স্টেশন লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠত। আগেরদিন সন্ধ্যা থেকে স্টেশনে ভিড় করতেন যাত্রীরা। সারারাত জেগে সকালে টিকেট নিয়ে ফিরতেন বাড়ি। কিন্তু গতকাল চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেনের অগ্রিম টিকেট নিতে যাত্রীদের নেই কোনো শোরগোল। নেই যাত্রীদের দীর্ঘলাইন। শুধু স্টেশন ম্যানেজার আর কয়েকজন আরএনবি সদস্য ছাড়া পুরো স্টেশন ফাঁকা।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী আজাদীকে জানান, করোনার কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গত বছরও ঈদে ট্রেন চলেনি। প্রতি বছর আমরা ঈদের ১০ দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকেট দিই। কিন্তু এবার সেরকম কিছু নেই।
এদিকে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের মতো একই অবস্থা আন্তঃজেলা বাস কাউন্টারগুলোতেও। যেখানে প্রতিবছর ঈদের অগ্রিম টিকেটের জন্য দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের ভিড় লেগে থাকতো। এক কাউন্টারে প্রত্যাশিত টিকেট না পেলে যাত্রীরা ছুটতো অন্য কাউন্টারে। এবার একেবারে তার উল্টো চিত্র। আন্তঃজেলা বাস কাউন্টারগুলোতে নেই ভিড়, নেই কোনো শোরগোল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্ত্রী-কন্যা হারিয়ে নির্বাক আরমান
পরবর্তী নিবন্ধটাকায় করোনা ভাইরাস!