মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

মোফাখ্‌খারুল ইসলাম খসরু

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৩ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

আবাসন প্রতিষ্ঠান ফিনলে প্রপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোফাখ্‌খারুল ইসলাম খসরু বলেছেন, দেশের অর্থনীতিতে আবাসন খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। দ্রুত উন্নয়ন, আবাসনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, মধ্যবিত্তের সমপ্রসারণ এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির পেছনে বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু সেই গুরুত্বপূর্ণ খাতটি আজ ভয়াবহ সংকটে পড়েছে।
তিনি বলেন, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে সবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল রিয়েল এস্টেট ব্যবসা। বিক্রিও কিছুটা বেড়েছিল। আমরা সামনে সুন্দর সময়ের অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু নির্মাণ সামগ্রীর ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির কারণে সামপ্রতিক মাসগুলোতে ফ্ল্যাটের দাম বাড়ছে। উচ্চমূল্য হওয়ার কারণে অনেক পরিবারের ফ্ল্যাট কেনার স্বপ্ন অধরা থেকে যাচ্ছে। এতে আবাসন খাতের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে এবং সরকারও নিশ্চিত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
মোফাখ্‌খারুল ইসলাম খসরু বলেন, সামপ্রতিক এই অস্বাভাবিক মুল্যবৃদ্ধিতে প্রতি বর্গফুটে শুধু স্টিলের খরচ বেড়েছে ১০০ টাকা, সিমেন্টের খরচ ৩০ টাকা, ইটের খরচ ২০ টাকা এবং পাথর বেড়েছে ৬৭ টাকা। এই হিসেব অনুযায়ী প্রতি বর্গফুট নির্মাণ খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৮১ টাকা। অথচ চলতি বছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সিমেন্ট ও স্টিল শিল্পে আগাম কর প্রত্যাহার করেছেন। যে কারণে নির্মাণ সামগ্রী সিমেন্ট, স্টিল, রডের দাম কমবে বলে আমরা আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু গত ৪ মাসে নির্মাণ সামগ্রীর দাম গড়ে ৩০-৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে আমাদের পুরো খাতকেই সংকটে ফেলেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম এবং জাহাজ ভাড়া ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় রডসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে। করোনার প্রভাব কাটিয়ে বিশ্বে নির্মাণকাজ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা অনুসারে কাঁচামাল পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে নির্মাণকাজের ভরা মৌসুম হওয়ায় এখন রডসহ অন্যান্য সামগ্রীর চাহিদা বেশি। তবে কাঁচামালের দাম না কমা পর্যন্ত রড-সিমেন্টের দাম কমবে না।
তিনি বলেন, নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ার প্রভাব সরাসরি আবাসন খাতে পড়েছে। এর ফলে আবাসন খাত বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ফ্ল্যাট ক্রেতাদেরকেও এই চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হবে। এ অবস্থায় অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং মধ্যবিত্তের স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে।
সরকারি মনিটরিংয়ের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি আবাসন সেক্টরকে বাঁচাতে ভ্যাট ট্যাঙের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর অগ্রিম আয়কর কমানো বা প্রত্যাহার করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্মাণ-সংশ্লিষ্ট পণ্যের আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধিতে বিপাকে পুুরো সেক্টর
পরবর্তী নিবন্ধসংকট উত্তরণে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে