মূল্য ফেরত নয়, দেরিতে হলেও পণ্যই দেওয়া হবে : ইভ্যালি এমডি

| সোমবার , ২৬ জুলাই, ২০২১ at ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়েছে, গ্রাহকরা ফেরত চাইছে পাওনা টাকা, এই পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ছয় মাস সময় চেয়েছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল। দীর্ঘদিনেও প্রতিশ্রুত পণ্য দেওয়া যায়নি এমন কিছু গ্রাহককে কয়েক মাস আগে ‘রিফান্ড চেক’ দিয়েছিল এই অনলাইন মার্কেটপ্লেস। চলতি মাসের শুরুতেই সেই চেক ক্যাশ হওয়ার কথা থাকলেও ব্যাংক টাকা দেয়নি। গত শনিবার মধ্যরাতে ফেইসবুক লাইভে এসে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাসেল বলেন, সর্বশেষ নির্দেশিকার কারণে ‘রিফান্ড’ দেওয়া সম্ভব নয়, দেরিতে হলেও গ্রাহকদের পণ্যই দেওয়া হবে। খবর বিডিনিউজের।

গত ১৬ জুন ইভ্যালি নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়, গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালির গ্রাহকের কাছে ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬৫৬০ টাকা এবং মার্চেন্টদের কাছে ১৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৪ টাকায় দেনা রয়েছে। এসবের বিপরীতে ইভ্যালির মোট সম্পদের পরিমাণ ৯১ কেটি ৬৯ লাখ ৪২৮৪৬ টাকা। এরমধ্যে চলতি মূলধন রয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি ১৭ লাখ ৮৩৭৩৬ টাকা। বর্তমান সম্পদ দিয়ে বকেয়ার মাত্র ১৬ শতাংশ পরিশোধ করতে পারবে ইভ্যালি। এই অবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক নোটিস দিয়ে আগামী ১ অগাস্টের মধ্যে ইভ্যালির আয়-ব্যয়, দায়-দেনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জমা দিতে বলেছে ইভ্যালিকে।
বাংলাদেশের ব্যাংকের ওই প্রতিবেদন চার মাস আগেই তৈরি করা হয়েছিল জানিয়ে রাসেল দাবি করেন, এরপর ইভ্যালি অনেক লাভ করেছে, অনেক উন্নতি করেছে। ওই প্রতিবেদনে ইভ্যালির ‘ফিউচার ভ্যালুয়েশন’ করা হয়নি। রিপোর্টে আমাদের ভ্যালুয়েশন মিসিং। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে বলেছিলাম যে আমাদেরকে ভ্যালুয়েশন করার সুযোগ দিন। আমাদের বিশাল এক কম্পোনেন্টকে স্কিপ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই বিজনেস দিয়ে কী পরিমাণ বিজনেস করা সম্ভব, সেটা ভ্যালুয়েশনে আসবে। যে অ্যামাউন্ট ডিউ আাছে, এই অ্যামাউন্টটা রিকভারি করা কোনো ব্যাপার না। ইভ্যালিসহ আরও কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার ধরন এবং গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ নিয়ে দীর্ঘ সময় পরও পণ্য না দেওয়া, অর্থ ফেরত না দেওয়াসহ ক্রেতা ‘ঠকানোর’ বিস্তর অভিযোগ নিয়ে সমপ্রতি আলোচনা শুরু হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নীরিক্ষার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইভ্যালিকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়।
বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেও ইভ্যালি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দাবি করে রাসেল বলেন, আমাদের লসগুলো ধীরে ধীরে কমে আসছিল। আমরা লাভ করা শুরু করেছিলাম। এই ধরনের বিজনেসে মেগাস্কেলের টারময়েল হলে সেলস কিছুটা ড্রপ করে। কিন্তু এটা সত্যি যে, অলমোস্ট ডিসকাউন্ট ছাড়াই গতকাল প্রায় ২০ কোটি টাকার অর্ডার কনফার্ম হয়েছে। এই ২০ কোটি টাকা অন্য সময়ে ৫০০ কোটি টাকার সমান। এই অর্ডারগুলো টাইমলি দিতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার মেনে সেখানে কিছুটা মোডিফিকেশনের দরকার হবে। ‘স্বাভাবিক’ ব্যবসা করার সুযোগ পেলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পুরনো সব অর্ডার শোধ করে দেওয়া সম্ভব হবে বলে পাওনাদারদের আশার কথা শোনান ইভ্যালি এমডি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাধ্যবাধকতা ৬০ দিনের চলে বছরের পর বছর
পরবর্তী নিবন্ধবড়শি ছাড়াতে সাগরে নেমে ভেসে গেল যুবক