মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | বুধবার , ২৭ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

যাকাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এই ইবাদত সঠিকভাবে সম্পন্ন করা কর্তব্য। যাকাতের মাল সঠিকভাবে হিসেব করে সঠিক মানুষকে দিতে হবে। যে কোনো মানুষ যাকাত গ্রহণ করার যোগ্য নয়। মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে আট প্রকার মানুষ যাকাত গ্রহণ করার যোগ্য বলে ঘোষণা করেছেন।

কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, সাদকা তো কেবল ফকির, মিসকিন এবং সাদকা সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত লোকের জন্য, যাদের চিত্তাকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য, দাস মুক্তি, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরদের জন্য। এটি মহান আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। (সূরা তাওবা, ৯৪৬০)।

এই আট প্রকার মানুষ যারা যাকাত গ্রহণ করার যোগ্য তাদের পরিচয় দেওয়া হলো -১. ফকির : ফকির মানে গরীব, যাদের হাতে কিছু সম্পদ রয়েছে, কিন্তু প্রয়োজন পূরণ করতে অক্ষম। যাদের নিকট যাকাত ফরজ হওয়ার মত নিসাব পরিমাণ সম্পদ নেই, তাদের ফকির বলা হয়। ২. মিসকিন : নিঃস্ব, যার অন্ন যোগাড় করার মত অর্থ নেই। অন্যের কাছে হাত পাততে হয়। যারা কর্মক্ষম হওয়ার পরও কাজের অভাবে বেকার তাদেরকে হযরত ওমর ফারুক (র.) মিসকিন বলে গণ্য করেছেন। ৩. যাকাতের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তি : যাকাত আদায়, বিতরণ, হিসেব সংরক্ষণ ইত্যাদি সম্পাদন করার জন্য।

যাদের নিয়োগ করা হয় তাদের বেতন ভাতা যাকাত তহবিল হতে দেওয়া বৈধ। ৪. মন জয় করার জন্য : নও মুসলিমদের সমস্যা দূর করা এবং ইসলামের উপর অবিচল রাখার উদ্দেশ্য তাদের যাকাত প্রদান করা জায়েজ আছে। তারা ধনী হলেও তাদের যাকাত দেওয়া বৈধ। ৫. দাস মুক্তি : দাসত্ব শৃক্সখলে আবদ্ধ লোক এবং বন্দী মুক্তির জন্য যাকাতের সম্পদ ব্যয় করা যায়। কারণ মানুষ আল্লাহর দাসত্ব করবে, অন্য কারো নয়, এটাই মহান আল্লাহর বিধান।

তাই দাস মুক্তির গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। সাহাবায়ে কেরামের শাসনামলে চুক্তিবদ্ধ দাস মুক্তির জন্য যাকাতের অর্থ ব্যয় করা হতো। ৬. ঋণ পরিশোধ : ঋণে জর্জরিত, মানসিকভাবে হতাশ, ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা নেই, যারা ঋণের কারণে অন্যায় অসামাজিক কাজে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা, তাদের ঋণ হতে মুক্তির লক্ষ্যে যাকাত দেওয়া বৈধ। কোনো কোনো ফকিহ বলেছেন, যদি সে ঋণ অবৈধ কোনো কাজের জন্য নিােয় থাকে, যেমন- মদ খাওয়া, বিয়ের অবৈধ প্রথার অনুষ্ঠানসহ নানা অপকর্মের জন্য ঋণ নিলে সে ঋণ পরিশোধের জন্য যাকাতের মাল প্রদান বৈধ হবে না। ৭. আল্লাহর পথে ব্যয় : আল্লাহর পথে কথাটি ব্যাপক অর্থবোধক।

মুসলমান সমস্ত পূণ্যময় কাজ আল্লাহর পথে করে থাকেন। এখানে আল্লাহর পথে কথাটি বিশেষ অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। যে সব গাজী ও মুজাহিদ যাদের জিহাদের উপকরণ ক্রয় করার ক্ষমতা নেই তাদের এবং গরীব শিক্ষার্থীদের জন্য যাকাতের মাল দেওয়া জায়েজ আছে। ৮. মুসাফির : মুসাফির বা প্রবাসী যাদের বাড়িতে ধনসম্পদ রয়েছে তারা যদি পথে বা প্রবাসে অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়ে তাদেরকে যাকাতের মাল দেওয়া জায়েজ আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমোটরসাইকেল চুরিতে ‘অদ্ভুত সিস্টেম’
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীকে নকশী কাঁথা উপহার দিলেন আনোয়ারার রহিমা