মার্কেট ও ব্যাংক ঘিরে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা

ডিআইজির নিরাপত্তা রক্ষী খুনের আসামিসহ গ্রেপ্তার ১১

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৬ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির বাসভবনের নিরাপত্তা রক্ষী খুনের মামলার আসামি মিন্টুসহ ১১ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে সিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এদের মধ্যে তিনজন চারদিন আগে জামিনে জেল থেকে বের হয়েছে। গত সোমবার রাতভর নগরীর সদরঘাট ও খুলশী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আজাদীকে জানিয়েছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের বন্দর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি ডিবি) নোবেল চাকমা। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মিন্টু দাশ (৩১), বেলাল হোসেন (৩২), মো. জাহিদ (৩০), বিপ্লব চৌধুরী (৪৩), সুমন প্রকাশ চাকমা সুমন (২৩), মো. সাকিব (২৫), রুবেল কান্তি দাশ (৩২), মো. খোকন (২৫), খোকন হাওলাদার (৩০), জসিম উদ্দিন (২৫) ও নুরুল ইসলাম (৪৫)।
এডিসি নোবেল চাকমা জানান, নগরীর খুলশী থানার টাইগারপাস মোড়ে সোমবার মধ্যরাতে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিরত অবস্থায় মিন্টু, বেলাল, জাহিদ ও বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে দুটি চাকু উদ্ধার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খুলশী থেকে
আরও তিনজন ও সদরঘাট থেকে আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম আজাদীকে বলেন, চারদিন আগে মিন্টু ও বেলাল জেল থেকে জামিনে বের হয়। জাহিদ বের হয় একদিন পর। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, জেলে বসে তারা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। জেল থেকে বেরিয়ে তারা বাকি আটজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ১১ জন সংঘবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন এলাকা রেকি করেছিল। তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তারা নগরীর তিনটি স্থানে অবস্থান নেয়। তাদের কাছে ছোরা ছিল। ছিনতাইয়ে বাধা দিলে ছুরিকাঘাতের সিদ্ধান্তও ছিল।
তিনি জানান, ঈদকে সামনে রেখে মার্কেট-শপিংমলে আসা ক্রেতাদের, বিশেষ করে নারীদের এবং ব্যাংক থেকে নগদ টাকা নিয়ে বের হওয়া ব্যক্তিদের আটকে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা নিয়েছিল তারা। রমজানের প্রথম দিকে মাগরিবের নামাজের পর থেকে মার্কেট চালু থাকা পর্যন্ত এবং ভোর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তারা ছিনতাই করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তী সময়ে রমজানের মধ্যভাগে লেনদেন বাড়ার পর দিনে বিভিন্ন ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিয়ে টাকা উত্তোলনকারীকে টার্গেট করে ছিনতাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা।
ছিনতাইকারী ১১ জন একই গ্রুপের। তিন ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করে। মিন্টু দাশ তাদের মূল দলনেতা। বাকি দুটি গ্রুপে চাকমা সুমন ও জসিম নেতৃত্ব দিচ্ছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একাধিক মামলার আসামিও আছে। চাকমা সুমনের বিরুদ্ধে ১২টি, মিন্টুর বিরুদ্ধে ৪টি, জসিমের বিরুদ্ধে ১১টি, সাকিবের বিরুদ্ধে ৯টি, নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৫টি, খোকন হাওলাদারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা আছে।
এডিসি নোবেল চাকমা জানান, ১১ জনের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে নগরীর খুলশী থানায় এবং চারজনের বিরুদ্ধে সদরঘাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদের মধ্যে মিন্টু চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির বাসভবনের নিরাপত্তা রক্ষী খুনের মামলার আসামি। ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর খুলশী থানার বাটালি হিল এলাকায় ডিআইজির বাসভবনের নিরাপত্তা রক্ষী পুলিশ কনস্টেবল মো. আবদুল কাইয়ুমকে কুপিয়ে খুন করে একদল ছিনতাইকারী। তাদের হামলায় আহত হয়েছিলেন আরও তিন পুলিশ কনস্টেবল। ওই ঘটনার পর মিন্টুসহ কয়েকজন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাদরাসা মাঠে নির্মাণসামগ্রীর স্তূপ!
পরবর্তী নিবন্ধএক কাতারে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ