আমাদের সবার অতি পরিচিত পতঙ্গ হচ্ছে আরশোলা। এটি সচরাচর তেলাপোকা হিসেবেই অধিক পরিচিত। কোনোভাবে এই পতঙ্গের মাথা কাটা গেলেও তৎক্ষণাৎ মারা যায় না। মাথাহীন তেলাপোকা চলাচল করতে পারে।
তবে মাথা থেকে আসা তথ্যের অভাবে এলোমেলোভাবে চলাচল করে। মাথা ছাড়া অন্তত সপ্তাহখানেক বেঁচে থাকতে পারে।
তেলাপোকা ঠাণ্ডা রক্তযুক্ত পতঙ্গ। তাই তারা শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে বেশি শক্তি ব্যয় করতে হয় না।
তাদের বিপাকক্রিয়া উষ্ণ রক্তযুক্ত প্রাণীদের তুলনায় ২০ গুণ কমিয়ে ফেলতে পারে। মানুষের শ্বাস–প্রশ্বাস থেকে শুরু করে খাদ্য গ্রহণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণসহ সবকিছুই মাথার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু আরশোলার মাথা কাটা গেলেও গলার কাছে খুব সহজেই রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
তবে মাথা কাটা আরশোলার শরীর ২০ দিনের মধ্যে ব্যাক্টেরিয়া অথবা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আর এতে করেই আস্তে আস্তে মৃত্যুর মুখে পতিত হয়।
পেরিপ্লানেটা আমেরিকানা প্রজাতির পতঙ্গ তেলাপোকা ময়লা থেকে শুরু করে এমন কোনো জিনিস নেই যা তেলাপোকা খায় না। তেলাপোকা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে খাবার ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু পানি ছাড়া সপ্তাহ খানেক বাঁচতে পারে।
সারা বিশ্বেই এদের খুঁজে পাওয়া যায়। এরা সব পরিবেশে বেঁচে থাকতে সক্ষম। কিছু প্রজাতির তেলাপোকা –১২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায়ও বেঁচে থাকতে পারে। এত নিম্ন তাপমাত্রায় বেঁচে থাকতে তারা গ্লাইসিরল দিয়ে নিজেদের তৈরি করে। বাংলাদেশ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চল হওয়ার এখানকার তেলাপোকা আকারে একটু বড় হয়। প্রায় ৪০ শতাংশ প্রজাতির তেলাপোকা একটু দূরত্বে উড়তে পারে।
পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণরূপে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে গেলেও সহজে অভিযোজনের কারণে তেলাপোকা পাঁচ কোটিরও বেশি বছর ধরে টিকে আছে। তেলাপোকা ব্লাটোডা পর্বের পোকা।
ছয় পা যুক্ত তেলাপোকা নিশাচর প্রাণী। মুরগি ও মাছের খাবার হিসেবে তেলাপোকার চাহিদা রয়েছে। এছাড়া মানুষের খাবার হিসেবেও বিশ্বের কোথাও কোথাও এটি ব্যবহৃত হয়। চীন, আফ্রিকার তাঞ্জানিয়াসহ কয়েকটি দেশে তেলাপোকার বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে।
এছাড়া ঔষধ ও প্রসাধনী শিল্পেও তেলাপোকার ব্যবহার হয়।