ভয়-ভীতি ও নিপীড়ন ছাত্রদের দমানো যায়নি

আজাদী ডেস্ক | শনিবার , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি অগ্নিঝরা ‘একুশে’র প্রতীক্ষায় ছিল পুরো জাতি। সারাদেশে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরদিন প্রতিবাদের রূপ কী হয় তা নিয়ে একটা তুমুল আলোড়ন চলছিল মানুষের মনে। আর ছাত্র যারা এই আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, তারা ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ১৯৫২ সালের এই দিনে ছাত্রদের আন্দোলনের প্রস্তুতির তীব্রতা ও অনমনীয় ভাব দেখে পূর্ববঙ্গ সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে সমাবেশ ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করে দেয়। মূলত জনমনে ভীতি ও ত্রাস সঞ্চারের চিরাচরিত পন্থাই পাকিস্তান সরকার গ্রহণ করেছিল। তবে এসব ভয়ভীতিতেও দমানো যায়নি ছাত্রদের। দলবদ্ধ হয়ে স্লোাগান দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে পথে বেরিয়ে এলে এবং প্রাদেশিক পরিষদ ভবনের দিকে যাবার চেষ্টা করলে পুলিশ যখন তাদের ওপর প্রচণ্ড কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ, বেপরোয়া লাঠিচার্জ ও পাইকারি গ্রেফতার শুরু করে। তখন মেডিক্যাল কলেজের ওয়ার্ড বয়, বেয়ারা, মেডিক্যাল হোস্টেল সংলগ্ন রাস্তার পাশে রেস্টুরেন্টের বয় বেয়ারা, পথচারী, রিকশাওয়ালা প্রমুখ তাদের সঙ্গে যোগদান করে। এসময় এমএলএ ও মন্ত্রীরা মেডিক্যাল কলেজের সামনে দিয়ে পরিষদে আসতে থাকেন। ছাত্ররা যতই স্লোগান দেয় আর মিছিলে একত্রিত হয় পুলিশ ততই হানা দেয়। কয়েকবার ছাত্রদের উপর কাঁদানে গ্যাস ছেড়ে তাড়া করতে করতে মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেলের ভেতর ঢুকে পড়ে। হোস্টেল প্রাঙ্গণে ঢুকে ছাত্রদের উপর আক্রমণ করায় ছাত্ররা বাধ্য হয় ইটপাটকেল ছুঁড়তে। পুলিশ তখন দিগ্বিদিক শূন্য হয়ে ছাত্রদের উপর গুলি চালায়। এম আর আখতার মুকুল সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, বেলা তিনটা দশ মিনিটের সময় আকস্মিকভাবে একদল সশস্ত্র পুলিশ মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেলের মধ্যে প্রবেশ করে এবং গুলিবর্ষণ করে। ঘটনাস্থলে জব্বার ও রফিকউদ্দীন নিহত হন। প্রকাশ্য রাস্তার উপর পড়ে থাকা গোটা দুয়েক লাশ পুলিশ নিজেদের ট্রাকে নিয়ে যায়। শহীদদের জীবনদান ছড়িয়ে দিয়েছিল বিদ্রোহের আগুন। ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়ে আসে স্বাধীনতা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগ নেতা খুন
পরবর্তী নিবন্ধছিল ৪০, আছে ১০