ভক্তদের পদচারণায় মুখর মাইজভাণ্ডার

আজ মহান ১০ মাঘ

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ

গাউছুল আজম হযরত মাওলানা শাহছুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারির (.) ওরশের প্রধান দিবস আজ (মঙ্গলবার)। এ উপলক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারো নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। ওরশের প্রধান দিবস উপলক্ষ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও ভারত, মিয়ানমার, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দুইদিন আগে থেকেই ভক্তরা মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে আসতে শুরু করেছেন। ভক্ত আশেকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ। মুরিদ ভক্তআশেকদের ভিড়ে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ ও আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। জিকির, মাইজভাণ্ডারি মারফতি গান, মিলাদ মাহফিলের ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে পুরো এলাকা। আজ রাত ১২টা ১ মিনিটে আনজুমানে মোত্তাবেইনে গাউছে মাইজভাণ্ডারি শাহ এমদাদীয়া মঞ্জিলের শাজ্জাদানশীন শাহসূফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারির (মাজিআ) আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে ওরশের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। এ উপলক্ষ্যে ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও ফটিকছড়ি থানা পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

এদিকে, গতকাল গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারির (.) ওরশ উপলক্ষে তাঁর মাজারে গিলাপ চড়ানো হয়েছে। সোমবার সকালে গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারির (.) রওজায় গিলাপ চড়ান গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারি (.) ও নায়েব সাজ্জাদানশীন এবং মোন্তাজেম সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারি (.)। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খান অ্যাগ্রো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দুল হক খান, মাইজভাণ্ডারি ফাউন্ডেশনের কোচেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন সৈয়দ সোহেল হাসনাত ও চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর এবং আওলাদে গাউছুল আজম শাহজাদা সৈয়দ মুহাম্মদ এরহাম হোসাইন ও শাহজাদা সৈয়দ মানাওয়ার হোসাইন। পরে রওজা প্রাঙ্গণে তাওয়াল্লোদে গাউছিয়া, জিকির ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন সাজ্জাদানশীন সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (.)

জানা যায়, গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারি হযরত মওলানা শাহসুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (.) ১২৩৩ বাংলা পহেলা মাঘ, রোজ বুধবার জোহরের সময় জন্মগ্রহণ করেন। ৭৯ বছর বয়সে ১৯০৬ সালে (১৩১৩ বঙ্গাব্দে ১০ মাঘ) সোমবার দিবাগত রাতে ইহধাম ত্যাগ করেন। চার বছর বয়সে গ্রাম্য মক্তবে হযরতের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১২৬৮ হিজরীতে তিনি কলকাতা আলিয়া মাদরাসার শেষ পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। হিজরী ১২৬৯ সালে তিনি যশোর জেলায় কাজী (বিচারক) পদে যোগদান করেন। ১২৭০ হিজরীতে কাজী পদ থেকে পদত্যাগ করে কলকাতার মুন্সি বুআলী মাদরাসায় প্রধান মোদার্রেছের পদে যোগদান করেন। তার পীরে তরিকত ছিলেন শেখ সৈয়দ আবু শাহমা মুহাম্মদ ছালেহ আল কাদেরী লাহোরী (রহ🙂। অপরদিকে পীরে তরিক্বতের বড়ভাই হযরত শাহ সৈয়দ দেলাওয়ার আলী পাকবাজ (রহ🙂 এর কাছ থেকে কুতুবিয়তের ফয়েজ অর্জন করেন। বিল আছালত বা স্বভাব সিদ্ধ অলি হযরত গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারি (কঃ) তার পীরে ত্বরিকতের নিদের্শে ১৮৫৭ সালে নিজ গ্রাম মাইজভাণ্ডারে ফিরে আসেন। কিছুদিনের মধ্যেই তার বুযুর্গীর কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ তার দরবারে ভিড় জমায়। লোকসমাজে পরিচিতি পায় ‘মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ’ হিসেবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাবারে মেয়াদোত্তীর্ণ গুঁড়ো দুধ ও কাপড়ের রং ব্যবহার
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬