বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা : শান্তি আর স্বস্তির খোঁজে মানুষ!

লালন কান্তি দাশ | শনিবার , ১৩ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৫৮ পূর্বাহ্ণ

গত দুই বছর মানুষের জীবন কেটেছে করোনার সাথে যুদ্ধ করে। যদিও এ যুদ্ধ বা সংকট পুরোপুরি দূর হয়েছে একথা বলার সময় এখনো আসেনি। করোনা পরিস্থিতি যখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে তখন শুরু হল রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ, যা এখনো চলমান। যার ফলে বিশ্ব নতুন করে সংকটে পতিত হয়েছে। দুটো মাত্র দেশ যুদ্ধে জড়ালেও এর নেতিবাচক প্রভাবের কারণে সমগ্র বিশ্বব্যাপী বিরাজ করছে অস্থিরতা। বৈদেশিক বাণিজ্যে অসাঞ্জস্যতা ও ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সহ নানান সংকট মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তুলছে দিনের পর দিন। কোথাও যেন শান্তি নেই, নেই স্বস্তি। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কিছু দেশ দেউলিয়া হয়েছে বা হওয়ার পথে। যুদ্ধ পরিস্থিতিকে পুঁজি করে চলছে রমরমা অস্ত্রের ব্যবসা আর বিশ্ব রাজনীতির চালকের আসনে বসার নানান সমীকরণ। জ্বালানি সংকটকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সারাবিশ্বে নাজুক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। নতুন করে আরো দু’একটি যুদ্ধ সৃষ্টির মত সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। অর্থাৎ সংকট থেকে সহসা মানুষের মুক্তি মিলছে না একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। এক কথায় প্রকৃতিসৃষ্ট ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের কারণে দেশে দেশে দুর্ভোগ বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থায় আছে তৃতীয় বিশ্বের মানুষ। নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশ্বায়নের যুগে সমগ্র বিশ্ব এখন একসূত্রে গাঁথা। তাই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে কোনো গোলযোগ দেখা দিলো প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে এর নেতিবাচক ফল ভোগ করতে হয় সবাইকে। এমতাবস্থায় ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা বাড়ছে এবং এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সামাজিক জীবনে। প্রভাবশালী দেশগুলোর আধিপত্য বিস্তারের মনোভাব ও স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে পৃথিবীতে বিপর্যয় নেমে আসছে। এমন দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে মরিয়া মানুষ। পৃথিবীতে শান্তির সুবাতাস বয়ে যাক এটি কোটি কোটি মানুষের চাওয়া। আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে শত্রুতা বৃদ্ধি বা মানুষের জীবনহানি নয়, সবার জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলাই হোক বিশ্বনেতাদের মূল লক্ষ্য। সেইসাথে দেশে সরকারের সময়োপযোগী ও জনবান্ধব পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সাশ্রয়ী নীতির সাথে জনগণের একাত্মতা অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে সবকিছু স্বাভাবিক ছন্দে চলুক, মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসুক- এটাই সকলের প্রত্যাশা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউচ্ছেদের পর উচ্ছেদ, ফের দখলে ফুটপাত
পরবর্তী নিবন্ধকারিগর