বাংলা ভাষা ও শহীদ মিনার গুরুত্ব পাক প্রতিদিনই

তাওহীদুল ইসলাম নূরী | সোমবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:২৩ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বের ইতিহাসে সেই থেকে আজ পর্যন্ত কোন জাতি নিজেদের ভাষার দাবি আদায়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেনি, রক্ত ঝরিয়ে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দেয় নি। বিশ্বের ইতিহাসে আমরাই একমাত্র জাতি, যারা নিজেদের মাতৃভাষার অস্তিত্ব রক্ষায় রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, জীবনের বিনিময়ে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা শুধু নয়, এটাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পর্যন্ত স্থান করিয়েছি। বিশ্বে জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত ১৯৪ টি দেশেই প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। অর্থাৎ, বিশ্বের বুকে ভাষা আন্দোলন আমাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি স্বীকৃতি। তাইতো, অনেক ত্যাগে অর্জিত এই ভাষা নিয়ে শুধু ফেব্রুয়ারি মাস আসলে নয় অনান্য সময় তথা বছর জুড়ে চাই এর আলোচনা, যথার্থ মূল্যায়ন। সরকারি, বেসরকারি নানানক্ষেত্রে এখনও ইংরেজিসহ অনান্য ভাষার যেখানে প্রাধান্যতা, সেখানে বাংলা ভাষার প্রতি চরম অবজ্ঞা লক্ষ্যণীয়। বছরের তিনটি জাতীয় দিবসের ২/১ দিন আগেপরে ছাড়া অনান্য সময় দেশের ৯০ শতাংশের বেশি শহিদ মিনার অবহেলিত থাকে। কিন্তু, শহিদ মিনার শুধু যে ভাষা আন্দোলনের প্রতীক তা নয়, ৭১র ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস থেকে শুরু করে ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবসের পরিচয়ও বহন করে দেশের প্রতিটি শহিদ মিনার। তাই, দেশের যে কোন একটি শহীদ মিনারকে অবজ্ঞা অবহেলা ৫২এবং ৭১এর শহীদদের আত্মাকে কষ্ট দেয়ারই নামান্তর। অথচ, পবিত্র এই স্থানটিতে জুতা পায়ে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা, খেলাধুলা, ফুটপাত বসা এবং জুটিদের মিলনস্থল এমনকি দেশের বিভিন্ন শহিদ মিনারে ময়লার স্তুপ হতেও দেখা যায় অনেক সময়।

ভুলে গেলে চলবে না, যে কয়টা কারণে বিশ্বের বুকে আমাদের পরিচিতি, তারমধ্যে একুশে ফেব্রুয়ারি অন্যতম একটি। এই যে আমাদের আজকের বাংলা ভাষা, কোনওভাবেই যেন এটার বিকৃতি কিংবা বিলোপসাধন না হয়, একটুও মানহানি না হয় এজন্য আমাদের সবাইকে তৎপর থাকতে হবে। আর, প্রতিটি দিনেই দেশের প্রতিটি শহিদ মিনারের পবিত্রতা এবং সুরক্ষার জন্য শহিদ মিনারগুলোর দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষকে কড়া নজরদারি রাখতে হবে, প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনৈতিক অবক্ষয় রোধে সকলের সামাজিকভাবে এগিয়ে আসা উচিত
পরবর্তী নিবন্ধ৫২’র ভাষার লড়াইয়ে সৈয়দ আবদুল মাবুদ