ফেসবুক-টিকটকে ‘ক্লান্ত’ তরুণ প্রজন্ম : রাষ্ট্রপতি

| শুক্রবার , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৪:৩৫ পূর্বাহ্ণ

মোবাইল ফোন বিনোদনের সঙ্গী হয়ে ওঠায় তরুণ প্রজন্ম সামাজিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলবে বলে সবাইকে সতর্ক করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় শিল্পকলা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এই সতর্কবার্তা দিয়ে সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তুলতে সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশের উপর জোর দেন। খবর বিডিনিউজের।
আবদুল হামিদ বলেন, মোবাইল আর ল্যাপটপ এখন তরুণ প্রজন্মের বিনোদন ও খেলাধুলার প্রধান সামগ্রী। তিনি বলেন, ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে আর যুব সম্প্রদায় ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, গেমসসহ বিভিন্ন অ্যাপের পেছনে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত। এভাবে চলতে থাকলে তারা নিজেদের ইতিহাস-ঐতিহ্যকেই একদিন ভুলে যাবে। তাই তাদেরকে সুস্থ ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় পর্যায়ে সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে। সংস্কৃতির চর্চা তৃণমূল বিশেষ করে পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে।
‘শিল্পকলা পদক ২০১৯ ও ২০২০’ প্রদান অনুষ্ঠানটি হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে, বঙ্গভবন থেকে তাতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন রাষ্ট্রপ্রধান। মহামারীর খড়গে এক বছর বাদে সেই অনুষ্ঠান হল। পদকজয়ীদের নাম গত বছরের ১৩ জুন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল শিল্পকলা একাডেমি।
সংস্কৃতি চর্চায় পরিবারের ভূমিকার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় প্রধান অস্ত্রের ভূমিকা রাখতে পারে সংস্কৃতি। আগে প্রতিটি পরিবারেই সকাল বেলায় সঙ্গীতসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের চর্চা হত। কিন্তু নগরসভ্যতার ক্রমবিকাশ, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার আর শহুরে জীবনের ব্যস্ততায় পারিবারিক পর্যায়ে সংস্কৃতির চর্চা ক্রমেই কমে আসছে। সামাজিক অবক্ষয় রোধে সংস্কৃতি চর্চার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, গ্রাম থেকে শহর, নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত প্রতিটি স্তরে সংস্কৃতির চর্চা যত বেশি হবে, সমাজও ততবেশি আলোকিত হবে। আলোকিত সমাজই পারে মানবিক সমাজ গড়তে, একটি দেশ ও জাতির কাক্সিক্ষত সমৃদ্ধি ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে। কালের বিবর্তনে সমাজে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সংস্কৃতিতেও এর ছোঁয়া লেগেছে।
ভিনদেশি সংস্কৃতির কোনো কিছু গ্রহণের ক্ষেত্রে তা নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা, তা খেয়াল রাখার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি বলেন, আকাশ সংস্কৃতির বদৌলতে প্রতিনিয়ত আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ভিনদেশি সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটছে। তাই বিদেশি বা আকর্ষণীয় হলেই সবকিছু লুফে নেওয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে যতটুকু সামঞ্জস্য, ততটুকুই গ্রহণ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয়, বিজাতীয় ও অপসংস্কৃতির সবকিছু বর্জন করতে হবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘পিকে হালদারের হিসাবে ৬০৮০ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন’
পরবর্তী নিবন্ধঅভিনব কায়দায় সিএনজি টেক্সি চুরি ও বিক্রি