ফরটিস এফসির ফুটবল প্রতিভা অন্বেষণের হাট

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ১৪ আগস্ট, ২০২২ at ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ফুটবলার হতে চাও!!! স্লোগান দিয়ে চট্টগ্রামে ক্ষুদে ফুটবলার বাছাই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ফরটিস ফুটবল ক্লাব। বলা যায় গতকাল সকাল থেকে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ক্ষুদে ফুটবলারদের মেলা বসেছিল। চট্টগ্রাম থেকে ফুটবলার সৃষ্টির প্রয়াস হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৬, ১৮ এবং ২০ বছর বয়সী ফুটবলার বাছাই করছে ক্লাবটি। মাত্র কয়দিনের প্রচারণায় প্রায় হাজার দেড়েক ক্ষুদে ফুটবলারের উপস্থিতি যেন ফুটবলের নব জাগরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বাংলাদেশে এখন সব বাচ্চারা ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। সেখানে এত ক্ষুদে ফুটবলারের উপস্থিতি যেন নতুন করে আশার সঞ্চার করছে ফুটবল মহলে। গতকাল মূলত ১৬ এবং ১৮ বছর বয়সী ফুটবলারদের বাছাই করা হয়েছে। আজ করা হবে ২০ বছর বয়সীদের। ফরটিস ফুটবল ক্লাবের সভাপতি শাহীন হাসান যিনি নিজেও একজন ফুটবলার ছিলেন তিনি নিজেও অভিভূত ছেলেদের ফুটবলের প্রতি আগ্রহ দেখে। ক্লাবটি খেলবে এবারে দেশের ফুটবলের সেরা লিগ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে। আর তার দলে নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রামের নামকরা সব ফুটবলারকে। মূলত চট্টগ্রামের প্রতি আলাদা একটি টান থেকেই এই প্রতিভা অন্বেষন কাজটি করছেন তিনি চট্টগ্রামে। শাহীন জানান তারা এরই মধ্যে ঢাকায় নিজস্ব মাঠ, সুইমিংপুল, জিম, ড্রেসিংরুম সহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করেছে।

এই বাছাই করা কিশোর ফুটবলারদের সে একাডেমিতেই গড়ে তোলা হবে। তিনি জানান চট্টগ্রাম থেকে ১৬০ জন ফুটবলার বাছাই করা হবে প্রাথমিক পর্যায়ে। তাদেরকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে আবার তিন দিনের ক্যাম্প করা হবে। সেখান থেকে চূড়ান্ত বাছাই করা হবে। এরই মধ্যে ঢাকা থেকে বাছাই করা হয়েছে দেড় শতাধিক। তাদের একাডেমিতে ১৬০ জন ছেলেকে তারা প্রশিক্ষণ দিতে পারবে। সম্পূর্ণ আধুনিক মানের এই একাডেমিতে ফুটবলারদের থাকা, খাওয়া, পড়ালেখার পাশাপাশি তাদের একটা বেতনও দেওয়া হবে। তিন বছর অনুশীলনের মাধ্যমে তাদের ফুটবল জ্ঞান দেয়া হবে। এরপর হবে উচ্চ পর্যায়ের প্রশিক্ষণ। শাহীনের প্রত্যাশা তাদের এই ফুটবলারদের পেছনে যে বিনিয়োগ তা হয়তো একসময় তুলে আনতে পারবেন। কারন তার ক্লাবে যেমন ফুটবলার লাগবে তেমনি একাডেমি থেকে ফুটবলার বিক্রিও করা হবে। যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত রয়েছে। এই একাডেমি পরিচালনার জন্য বিদেশ থেকে তরুণদের গড়ে তোলার মত কোচ, ট্রেইনার, ফিজিও সব আনছে একাডেমিটি। শুধু তাই নয় ফরটিস ফুটবল ক্লাবের সকল কর্মকর্তা এবং কোচিং স্টাফ রাখা হয়েছে চট্টগ্রামের।

গতকালের কিশোর ফুটবলারদের এই বিশাল হাটে পরীক্ষা দিতে আসা ক্ষুদে ফুটবলাররাও দারুন উচ্ছ্বসিত। সন্দীপ থেকে আসা আমজাদ, হাটহাজারীর ফাহিম, আনোয়ারার কায়সার, কিংবা পটিয়া থেকে আসা রাশেদ, সুমনরা দারুন খুশি। সবার যে সুযোগ মিলবে না সেটা জানে ফুটবলাররাও। তারপরও নিজের যোগ্যতা প্রমান করতে আসা ফুটবলাররা খুশি এমন একটি মঞ্চ পেয়ে। তারাও চান এভাবে অন্যরাও এগিয়ে আসুক। তাহলে চট্টগ্রামের ফুটবল আবার ফিরে পাবে তার হারানো গৌরব। কারণ তৃণমূল পর্যায় থেকে ফুটবলার সৃষ্টি করার কোন বিকল্প নেই।

এই ফুটবল প্রতিভা অন্বেষনকে ঘিরে গতকাল যেন এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে মেলা বসেছিল সাবেক ফুটবলারদেরও। সাবেক দুই জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক আশিষ ভদ্র, মামুনুল ইসলাম ছাড়াও সাবেক জাতীয় ফুটবলার আসাদ, যুব দলে খেলা শওকত, জেলা দলে খেলা দিপক বড়ুয়া, মো. কাশেম, প্রিন্স, টুটুল, জাহাঙ্গীর, ইকবাল, তৌহিদ, নজরুল বাবু সহ অনেকেই এসেছিলেন মাঠে। যাদের সচরাচর মাঠে কম দেখা যায়। তারাও বললেন ফুটবলের যৌবন ফেরাতে হলে তৃণমূলে যাওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই। গত দুই দিন ধরে চট্টগ্রামে চলছে বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটার বাছাই কার্যক্রম। আর গতকাল থেকে শুরু হয়েছে ফুটবলার বাছাই কার্যক্রম। চট্টগ্রামে কিছু সাবেক ফুটবলার নিজ উদ্যেগে একাডেমির মত করে ফুটবলারদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। ফুটবলের প্রাথমিক জ্ঞানটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে এই ধারা অব্যাহত থাকলে চট্টগ্রামের ফুটবল আবার ফিরে পাবে তার হারানো গৌরব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিন বছর পর কেন দলে সাব্বির?
পরবর্তী নিবন্ধকলেজছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার