পেকুয়ায় বাগানের গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে অলি আহমদ (৪৫) নামের এক সৌদি প্রবাসীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া ঢালারমুখ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত অলি আহমদ জারুলবুনিয়া সেগুনবাগিচা এলাকার শেখ আহমদের ছেলে। চলতি মাসে তার সৌদি আবর যাওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, একই এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে আব্দুল মজিদের সঙ্গে অলি আহমেদের দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। মজিদ বিভিন্ন সময় অলি আহমেদের দখলীয় গাছের বাগান জবরদখল করার চেষ্টা করে। ঘটনার দিন সকালে অলি আহমেদ তার বাগানে গাছ কাটতে গেলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাদশা মিয়ার দুই ছেলে আব্দুল মজিদ ও আব্দুল গণির নেতৃত্বে ৫/৬ দুর্বৃত্ত তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী হাফসা বেগম বলেন, বাগানের গাছ কাটা নিয়ে মজিদ ও গণির সঙ্গে আমার স্বামীর দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। আজ (গতকাল) সকালে আমার স্বামী প্রতিদিনের মতো বাগানে গাছ কাটতে যায়। পথে আব্দুল মজিদ ও আব্দুল গণিসহ কয়েকজন মিলে ধারালো দা দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। নিহতের ভাই শাহাব উদ্দিন বলেন, ভাই বাগানে যাওয়ার আগেই সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে বাগানে লুকিয়ে ছিল। তিনি বাগানে পৌঁছা মাত্রই দা-কিরিচ দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এমনকি মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেনি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ২ হামলাকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে মোবাইল বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় ফাতেমা বেগম (৩৮) নামের এক নারীকে আটক করেছে পেকুয়া থানা পুলিশ। আটক ফাতেমা শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া এলাকার সেগুনবাগিছা এলাকার আবদুস সালামের স্ত্রী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া এলাকায় বন বিভাগের জায়গায় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় অলি আহমদ ও আবদুল মজিদ গং এর মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। পরে মজিদ গং তাকে ধারালো দা ও কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। এ বিষয়ে নিহত অলি আহমদের স্ত্রী হাফসা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করেছেন। মামলার পর ফাতেমা বেগম নামের সন্দেহভাজন এক আসামিকে আটক করা হয়েছে।
থানা সূত্র জানায়, নিহত অলি আহমদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কঙবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
