রহস্যময় চাঁদের সবকিছুই জানা যাবে

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৬ মার্চ, ২০২২ at ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ

মানুষ প্রথম চাঁদে পা রাখে ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই। ২০২৪ সালে পরবর্তী চন্দ্রাভিযানের পরিকল্পনা আছে। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) ও পৃথিবীর অন্যতম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পেইস এঙ যৌথভাবে কাজ করছে এ চন্দ্রাভিযান সফল করতে। অভিযানের জন্য ১৮ জন নভোচারীর একটা তালিকা করা হয়েছে। এর অর্ধেক নারী। যাদের প্রশিক্ষণ চলছে। তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে পাঠানো হবে চাঁদে।
কেন এই চন্দ্রাভিযান? রকেট কীভাবে চাঁদে যায়? কী আছে চাঁদে? চাঁদের তাপমাত্রা কেমন? চাঁদের পর্বতমালা কেমন? এ রকম অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে এবার বইমেলায় প্রকাশিত ‘এই ছুটিতে চাঁদে যাব’ গ্রন্থে। বইটির লেখক নগরের প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের উপাধ্যক্ষ ফিরোজ আহম্মদ। ২০১৬ সালে ‘নাসা’য় গিয়েছিলেন তিনি। তখন অনুপ্রাণিত হন চাঁদ নিয়ে কিশোর উপযোগী একটি গ্রন্থ লেখার। যে গ্রন্থ পাঠের ফলে চাঁদ ও বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী হবে শিক্ষার্থীরা।
নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম জিমনেশিয়াম মাঠে বইমেলায় গতকাল ফিরোজ আহম্মদের সঙ্গে কথা হয় দৈনিক আজাদীর। গ্রন্থটি লেখার পরিকল্পনা বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আমাদের স্কুলের ছাত্রদের একটা টিম নিয়ে নাসায় যাই। স্টাডি ট্যুর ছিল সেটা। আমরা ১০-১২ দিনের মতো ছিলাম। সেখানে নাসার লেটেস্ট আবিষ্কার, নাসা যে চাঁদে গেছে তার কমান্ড মড্যুল, চাঁদের পাথরসহ আরো অনেক কিছু দেখার সুযোগ হয়েছিল। সেগুলো দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ভাবলাম একটা লেখা লিখি। কারণ আমরা মাত্র ২৫ জন গিয়েছিলাম, সাধারণ ছাত্র যারা তারা তো যেতে পারছে না। যারা যেতে পারেনি তাদের জন্য চাঁদের আদ্যোপান্ত নিয়ে লিখলে তারাসহ অন্যান্য শিক্ষার্থী এবং কিশোরদের উপকার হবে। সেটা ভেবেই ‘এই ছুটিতে চাঁদে যাব’ লিখলাম।
তিনি বলেন, গ্রন্থটি দুটো ভাগে লিখেছি। একটা ভাগে চাঁদের ফিজিক্যাল বিষয়গুলো, অন্য ভাগে সায়েন্টিফিক দিকগুলো তুলে ধরেছি।
ফিরোজ আহম্মদ বলেন, আমরা জানি ৫৩ বছর আগে মানুষ প্রথমে চাঁদে গিয়েছিল। ২০২৪ সালে আবার চাঁদে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। পরবর্তী চন্দ্রাভিযানে প্রথম কোনো নারী নভোচারীকে পাঠানো হবে। তার মানে চাঁদকে নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ ও গবেষণা থেমে নাই।
তিনি বলেন, এ গ্রন্থ লেখার আরেকটা কারণ কিশোরদের স্বপ্ন দেখানো। আমরা যখন নাসা যাই তখন নভোচারী মার্ক লী’র দুই-আড়াই ঘণ্টার একটা সেশন ছিল। তিনি ‘স্পেস স্টেশনে’ গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে ওই সেশনে অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন ছিল, স্পেস স্টেশনে কী করতেন, কীভাবে ঘুমাতেন, কীভাবে খেতেন? এমনকি কীভাবে ওয়াশরুম করতেন? এক পর্যায়ে দেখলাম আমাদের স্টুডেন্টরা প্রশ্ন করছে, আমরা কি আপনার মতো হতে পারব? তখন আমার মনে হলো ছাত্ররা তো স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে। ওই সময় মার্ক লী ছাত্রদের বলেছিলেন, কেন পারবে না। যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি তখন একজন নভোচারীকে দেখে আমিও স্বপ্ন দেখেছিলাম। আজ আমি নভোচারী হয়েছি।
ফিরোজ আহম্মদ বলেন, এ প্রজন্ম স্বপ্ন দেখার মতো কাউকে পায় না। এটা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। আমরা স্টার বলতে কেবল নায়ক-নায়িকাদের বুঝি। তাই চেষ্টা করেছি স্বপ্ন দেখার জায়গা থেকে ওরা যেন খুব সহজভাবে বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনার জন্য আগ্রহী হয় বইটি পাঠ করে। এটা কিশোর পাঠকদের বিজ্ঞানমনস্ক করে তুলবে-এই প্রত্যাশাই আমার।
কিশোর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কেন? কিভাবে? এই দুটি প্রশ্ন মনের ভেতর উকিঝুঁকি দিলেই বুঝতে হবে তোমাদের বিজ্ঞানী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রচুর। গ্যালিলিও গ্যালিলেই, আইজ্যাক নিউটন, আইনস্টাইনের মতো বড় বড় বিজ্ঞানীদের মনে এই দুটি প্রশ্ন সবসময় খেলা করত। রাতের আকাশে মিটিমিটি তারা আর উজ্জ্বল চাঁদকে দেখে তোমাদের মনে নিশ্চয়ই অনেক প্রশ্ন জাগে। এই বইটি যত্ন করে পড়ে নিও। আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী চাঁদের রহস্য অনেকখানিই উন্মুক্ত হবে তোমাদের কাছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদৈহিক গড়ন নিয়ে কটাক্ষের শিকার ৭০ শতাংশ নারী
পরবর্তী নিবন্ধপেকুয়ায় প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা