দৈহিক গড়ন নিয়ে কটাক্ষের শিকার ৭০ শতাংশ নারী

| রবিবার , ৬ মার্চ, ২০২২ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

দৈনন্দিন জীবনে ঘরে এবং বাইরে ৭০ শতাংশ নারী তাদের চেহারা, গায়ের রং, উচ্চতাসহ দৈহিক গড়ন নিয়ে নানা ধরনের বিরূপ মন্তব্যের শিকার হচ্ছেন বলে এক জরিপে উঠে এসেছে। ‘তরুণীদের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং মানসিক স্বাস্থ্যে এর প্রভাব’ শীর্ষক এক জরিপে এমন তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশন। গতকাল শনিবার ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস সামনে রেখে পরিচালিত এই সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ। খবর বিডিনিউজের। জরিপের তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ৬৯ দশমিক ৯২ শতাংশ তরুণী তাদের শারীরিক অবয়ব নিয়ে নানা ধরনের নেতিবাচক মন্তব্যের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩৭ দশমিক ২৪ শতাংশ তরুণী বলছেন, শরীরের আকৃতি, গঠন এবং অবয়ব নিয়ে আত্মীয়রাই কথায় ও ইঙ্গিতে হেয় প্রতিপন্ন করেন তাদের। এছাড়াও বন্ধুবান্ধবের কাছে বডি শেমিংয়ের শিকার হয়েছেন ২২ শতাংশ। আর ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ তরুণী বলেছেন, পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেও এ ধরনের মন্তব্য শুনেছেন তারা।
বিভিন্ন জেলা এবং বিভাগের ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী এক হাজার ১৪ জন শিক্ষিত তরুণী জরিপে অংশ নেন। এদের মধ্যে ৮৮ দশমিক ১৭ শতাংশ অবিবাহিত, ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ বিবাহিত এবং বাকিরা আর সংসার করছেন না।
প্রতিদিনের জীবনে নারীরা কতটা বৈষম্য, লাঞ্ছনা, যৌন হয়রানি, সমাজ ও পরিবারের বাধা এবং নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির সম্মুখীন হয়েছেন এবং সেসব ঘটনা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে কেমন প্রভাব ফেলেছে তা এই জরিপে তুলে ধরা হয়।
দেখা গেছে, ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ তরুণীকে পথচারীর কাছে থেকে শারীরিক অবয়ব নিয়ে নেতিবাচক কথা শুনতে হয়েছে। ওজন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যের শিকার হন ৩৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ তরুণী। গায়ের রঙ নিয়েও ৩৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ তরুণী এ ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান। এছাড়া উচ্চতা, মুখাবয়বের গঠন ও দাগ, কণ্ঠস্বর নিয়েও নানা বিরূপ কথা শুনেছেন তরুণীদের অনেকেই।
জরিপে অংশ নেওয়া ২৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ তরুণী মনে করেন, আর্থিক অস্বচ্ছলতা তাদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পাশাপাশি বেকারত্বের কারণে ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ তরুণী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হন। সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়ে ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং যৌন নিপীড়নের কারণে ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ তরুণী মানসিকভাবে প্রভাবিত হন।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিনিয়ত হেয় প্রতিপন্ন হলে একজন মানুষের আত্মবিশ্বাস কমে যায় এবং হীনমন্যতা কাজ করে। পরে এসব ঘটনা আত্মহত্যার অনুঘটক হিসেবেও ভূমিকা রাখে।
নারীদের নিয়ে এই জরিপের ফলাফল প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনে গুরুত্ব দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যাটিং ব্যর্থতার পর ক্যাচ মিসের মহড়া
পরবর্তী নিবন্ধরহস্যময় চাঁদের সবকিছুই জানা যাবে