ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ক্যাচ মিসের মহড়া

বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ।। ৮ উইকেটে হেরে সিরিজ হাতছাড়া টাইগারদের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ৬ মার্চ, ২০২২ at ৭:৪৫ পূর্বাহ্ণ

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতা হলো না টাইগারদের। দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে সমতা (১-১) আনে আফগানিস্তান। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৬১ রানে উড়িয়ে দিয়ে এই সংস্করণে টানা আট হারের বৃত্ত ভেঙেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই বাজে পারফরম্যান্সে আগের অবস্থানে ফিরলো যেন তারা। মিরপুরে গতকাল গতকাল ম্যাচের শুরুতে প্রয়াত দুই অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি উইকেট কিপার রডনি মার্শ ও লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্নকে স্মরণ করে দুই দল। এদিন আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ১১৫ রান করতে পারে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের সর্বনিম্ন স্কোর এটিই।
আঙুলের চোট কাটিয়ে শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে মুশফিকুর রহিম সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন ২৫ বলে। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তার ৪৩ রানের জুটি ছাড়া আর কোনো জুটি স্পর্শ করতে পারেনি ২০ রানও। আগের ম্যাচে ৯৪ রানে গুটিয়ে যাওয়া আফগানিস্তান এবার হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের অপরাজিত ফিফটিতে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ১৪ বল বাকি থাকতে। শূন্য রানে জীবন পেয়ে ৪৫ বলে ৫ ছক্কা ও ৩ চারে ৫৯ রান করেন জাজাই। চোটের কারণে স্পিনার মুজিব উর রহমানকে এই ম্যাচে পায়নি আফগানিস্তান। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তবু কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ। আফগানদের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন ফজল হক ফারুকি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ফারুকি ওভার শুরু করেন দুটি ওয়াইড দিয়ে। ওভারের বাকি বলগুলোতে রানের জন্য ছটফট করেন মুনিম শাহরিয়ার। পরের ওভারে মোহাম্মদ নবিকে একটি চার মারার পরই বিদায় নেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বেরিয়ে এসে সহজ ক্যাচ দেন মিড অফে। প্রথম ম্যাচে ১৭ রানের পর এবার করলেন ৪। ফারুকির শর্ট বল পুল করে লিটন দাস দারুণ একটি ছক্কা মারেন ডিপ স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে। কিন্তু প্রথম ম্যাচের মতো এবার আর ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ওমরজাইয়ের শর্ট বলে ধরা পড়েন বাউন্ডারিতে। এই ম্যাচেও পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ২ উইকেট হারিয়ে তুলতে পারে কেবল ৩৩ রান। নাঈম শেখ ১৯ বলে করেন ১৩ রান। রশিদ খানের বলে একবার তাকে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর বেঁচে যান রিভিউ নিয়ে। পরে বিদায় নেন রান আউটে। সাকিব আল হাসান এদিনও পারেননি দুই অঙ্কে যেতে। বাজে শটে বিদায় নেন বল আকাশে তুলে। দশম ওভারে ৪৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে প্রতিরোধ গড়েন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। দুজনের ব্যাটে বাড়তে থাকে রান। ৩১ বলে ৪৩ রানের জুটি ভাঙেন রশিদ। তার বলে এলবিডব্লিউ হন মাহমুদউল্লাহ ১৪ বলে ২১ রান ছিল তার সংগ্রহ। মুশফিক এরপর এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। কিন্তু ঝড় তোলার কথা যখন, তখনই বিদায় নেন তিনি। সপ্তদশ ওভারে আক্রমণে ফেরা ফারুকির স্লোয়ারে ক্যাচ দেন কাভারে। ৪টি চারে গড়া তার ৩০ রানের ইনিংস। বাঁহাতি পেসার ফারুকির ওই ওভারেই ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে গোল্ডেন ডাক এর তেতো স্বাদ পান মেহেদি হাসান। আফিফ হোসেনও করতে পারেননি কিছুই। বাংলাদেশের জন্য একমাত্র স্বস্তির বিষয়, অলআউট হতে হয়নি তাদের।
প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে জয়ের নায়ক নাসুম আহমেদ এবারও প্রথম ওভারে পেতে পারতেন উইকেট। কিন্তু নিজের বলে জাজাইয়ের সহজ ক্যাচ ফেলেন তিনি। পরের ওভারে রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফিরিয়ে দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন অফ স্পিনার মেহেদি। এরপর সফরকারীদের এগিয়ে নেন জাজাই ও দলে ফেরা উসমান গনি। গনিকে ফেরানোর সুযোগ আসে দুবার। কিন্তু ৩৯ রানে আফিফ ও ৪১ রানে নাঈম ফেলেন তার ক্যাচ। দুবারই বোলার ছিলেন মেহেদি। অবশেষে মাহমুদউল্লাহ যখন ৯৯ রানের জুটি ভাঙেন গনিকে ফিরিয়ে আফগানিস্তান তখন পৌঁছে গেছে জয়ের অনেক কাছাকাছি। দারবিশ রাসুলিকে নিয়ে বাকিটা সারেন জাজাই। নাসুমের বলকে ছক্কায় উড়িয়ে ম্যাচের ইতি টানেন দারবিশ রাসুলি। ম্যান অব দা ম্যাচ হন আফগানিস্তানের আজমতউল্লাহ ওমরজাই আর ম্যান অব দা সিরিজ ফজলহক ফারুকি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে আগুনে দগ্ধ ব্যবসায়ীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধদৈহিক গড়ন নিয়ে কটাক্ষের শিকার ৭০ শতাংশ নারী