চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, রাউজান ও বাঁশখালী উপজেলায় পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে সাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি জানান, গত শনিবার দুপুরে শিলক ইউনিয়নের পূর্ব বড়ুয়াপাড়া গ্রামে কর্ণফুলী নদীতে গোসলে নেমে পানিতে ডুবে সোহম বড়ুয়া (১১) ও আপন বড়ুয়া (৯) নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা সম্পর্কে চাচাত ভাই। তাদের বাড়ি উপজেলার শিলক ইউনিয়নের পূর্ব বড়ুয়াপাড়া গ্রামে। গত রোববার বেলা সোয়া ১২টার দিকে কর্ণফুলী নদীর ইছামতীর মোহনা থেকে সোহমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আগের দিন শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে একই এলাকা থেকে আপনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জানা গেছে, সোহমের চাচাত ভাই আপন বড়ুয়া ঈদ ও নববর্ষের ছুটিতে পরিবারের সাথে চট্টগ্রাম নগরের বাসা থেকে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসে। গ্রামের বাড়িতে থাকা সোহমের সাথে ঘরের পাশে কর্ণফুলী নদীতে গোসল করতে যায় আপন। গোসলের এক পর্যায়ে পানির স্রোতে তারা তলিয়ে যায়। টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন নদীতে খোঁজ চালায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের রাঙ্গুনিয়া স্টেশনে খবর দিলে চট্টগ্রাম নগর থেকে ডুবুরি এসে অভিযান চালায়। ফায়ার সার্ভিসের রাঙ্গুনিয়া স্টেশন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান সুমন বলেন, খবর পেয়ে চট্টগ্রাম নগরের ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিকে খবর দিলে তারা এসে উদ্ধার অভিযান চালায়। পাশাপাশি কাপ্তাই নৌ বাহিনীর ডুবুরি দলও নদীতে নামে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সোহমকে ও নৌ বাহিনীর ডুবুরি দল আপনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
রাউজান প্রতিনিধি জানান, গত পাঁচ দিনে রাউজানে পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একজন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে। জানা যায়, গতকাল সোমবার পুকুরে ডুবে মারা যায় রিত্তিকা দেবী (২) নামে এক শিশু। সে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নে ৫ নং ওয়ার্ডের পাঁচখাইন গ্রামের সুজন দেব নাথের মেয়ে। ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে স্থানীয় যুবলীগ নেতা সম্রাট দেবনাথ। তিনি বলেন, শিশু রিত্তিকা দুপুরে খেলতে গিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। পরে খোঁজাখুঁজি করে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তার দেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগের দিন রোববার গহিরা মোবারকখীল গ্রামে এলিনা (১১) ও সাদিকা সাজনুর (১৩) নামে দুই মামাতো–ফুফাতো এক সাথে পুকুরে ডুবে। এই ঘটনায় এলিনা মারা গেলেও সাদিকা সাজনুর এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। নিহত এলিনা হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা গ্রাম থেকে রাউজানের মোবারকখীল নানা বাড়ি ঈদে বেড়াতে এসেছিল মায়ের সাথে। সে গড়দুয়ারা গ্রামের মো. ফোরকানের কন্যা। এর আগে ঈদের আগের দিন বুধবার রাউজান পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের বাঁচা মিয়া সওদাগরের বাড়িতে পুকুরে ডুবে মারা যায় মো. ইব্রাহিম (৩) নামে এক শিশু। সে ওই এলাকার প্রবাসী আব্দুর রহিমের ছেলে।
বাঁশখালী প্রতিনিধি জানান, বাঁশখালীর ছনুয়াতে এবং শেখেরখীলে পৃথক ঘটনায় পুকুরে ডুবে মোহাম্মদ ইসমাঈল (৫) এবং মো. আইয়ুুব মিয়া (২) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে ছনুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মোহাম্মদ ইসহাকের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাঈল (৫) পুকুরে পড়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে বাঁশখালী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে রোববার সকালে শেখেরখীল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পেঠান মিয়াজী পাড়া এলাকার মো. ইউসুফের পুত্র আইয়ুব বাড়ির পাশে পুকুরে পড়ে যায়। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।