পশ্চিমবঙ্গে বিপর্যয়ে ক্ষোভ বিজেপি’তে

মোদী-অমিতকে দোষারোপ

| সোমবার , ৩ মে, ২০২১ at ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

পশ্চিমবঙ্গে এবারের বিধানসভা নির্বাচনের ভোটে বাংলা দখলের লড়াইয়ে কার্যত বিপর্যয় হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি)। এমন পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছেন রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের নাম না নিলেও রাজ্যের এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, যারা সেনাপতি হয়েছিলেন, জিতলে তারা কৃতিত্ব নিতেন। তাদেরকে এখন হারের দায়ও নিতে হবে। খবর বিডিনিউজের। দৈনিক আনন্দবাজার জানায়, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের শুরুতে এবার ‘২০০ পার’ স্লোগান নিয়ে মাঠে নেমেছিল বিজেপি। কিন্তু ভোট গণনার প্রথম পর্বেই সেই স্লোগানের বদলে বিজেপি ১০০ আসন পার হওয়া নিয়ে ভাবনায় পড়েছে। এবার প্রথম থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের দায়িত্ব রাজ্যের হাত থেকে নিয়ে নিয়েছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এলাকাভেদে দলের অবস্থা দেখভাল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় পাঁচ নেতাকে। এরপর অবিরাম একের পর এক নানা কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্যে সাংগঠনিক কাজে জোর দিতে পারেনি বলে তখনই পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি’র অনেক নেতা অভিযোগ করেছিলেন। রোববার ফলের প্রাথমিক ধারণা মেলার পর সেই নেতারা আরও স্পষ্ট করে একই অভিযোগ তুলছেন। এমন আলোচনাও শুরু হয়েছে যে, অনেক জায়গাতেই দলের পুরনো নেতা, কর্মীদের ওপর ভরসা না রেখে নবাগতদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যে বিজেপি-র এক নেতার কথায়, ‘প্রার্থী ঠিক করার ক্ষেত্রেও রাজ্য নেতাদের কথা অনেক সময়ই শোনা হয়নি। তাতে নিচুস্তরের কর্মীদের মনোবল ভাঙা হয়েছিল। সমর্থকদের মনোবলও যে ভেঙে গিয়েছিল তাও এখন স্পষ্ট।’ ক’দিন আগেও বাংলায় নতুন সরকার আসা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী বিজেপি’র স্বপ্নভঙ্গের কারণ সম্পর্কে রাজ্য বিজেপি’র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গী বলছেন, ‘হয়ত বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পছন্দ করেন।’
এবারের নির্বাচনে আরেকটি বিষয়ও পরিষ্কার হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা কেবল হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি’কে ভোট দেয়নি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের মতো হিন্দু বাঙালিরা এবার বিজেপি’কে ঢেলে ভোট দিলে দলটি অনেকটাই এগিয়ে থাকত। কিন্তু ২০১৯ সালের সেই সামপ্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি এবার ব্যর্থ করে দিয়েছে বাঙালি হিন্দুরা। যদিও রাজনীতি বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, কিছু হিন্দু ভোট বিজেপি পেয়েছে। মেরুকরণের সেই রাজনীতি একেবারে বৃথা যায়নি। তবে হিন্দুদের একটা বড় অংশ যে এবার তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে সেটাও তারা স্বীকার করছেন। এবারের নির্বাচনে দুই প্রধান প্রতিপক্ষই তৃণমূল আর বিজেপি। তৃণমূলকে হঠাতে বিজেপি মরিয়া ছিল। গত কয়েকমাসে বাংলায় বার বার সফর করাসহ তৃণমূলের বিশিষ্ট নেতাদের দলে টেনে বিজেপি নেতারা কার্যত জোড়াফুল শিবিরকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছিলেন, এমনটাই ধারণা পর্যবেক্ষকদের। কিন্তু, সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, ট্রেন্ড অনুযায়ী বাংলায় তিন অঙ্ক পার করতে পারেনি বিজেপি শিবির।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু
পরবর্তী নিবন্ধকাবুলে ট্যাংকার বিস্ফোরণ ৪ জনের মৃত্যু