অজ্ঞাত টেলিফোনে ভোটের ফল পাল্টানোর অভিযোগ

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন । সাংবাদিক সম্মেলনে পুনরায় নির্বাচন দাবি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শিল্পীর

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৩ মে, ২০২৪ at ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হলেও বিজয়ী ঘোষণার দুই ঘণ্টা পর অজ্ঞাত টেলিফোনে হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী বিবি ফাতেমা শিল্পীর ভোটের ফলাফল পাল্টে গেছে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে।

গতকাল ২২ মে বুধবার বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী বিবি ফাতেমা শিল্পী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ২১ মে মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে আমি ‘প্রজাপ্রতি’ প্রতীকের প্রার্থী শিল্পীকে ২০ হাজার ২২ ভোটে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবিএম মশিউজ্জামান। আমার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ‘ফুটবল’ প্রতীকে সাজেদা বেগম পান ১৯ হাজার ৫৩ ভোট। সন্ধ্যায় বিজয় ঘোষণার পর আমার কর্মীসমর্থকরা উল্লাস করেন। কিন্তু দুই ঘণ্টা পর অজ্ঞাত টেলিফোন পেয়ে আমার ফলাফল পরিবর্তন করে ‘ফুটবল’ প্রতীকের প্রার্থী সাজেদা বেগমকে ৩০ হাজার ৭১৫ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার।’ জালিয়াতি ও কারচুপির এ ফলাফল প্রত্যাখান করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুনরায় নির্বাচনের দাবিসহ ফলাফল পাল্টানোর রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান তিনি। সেই সাথে ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের অভিযোগ ও ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের ঘোষনা দেন তিনি।

বিবি ফাতেমা আরো বলেন, হাটহাজারীতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ভোট কারচুপির ঘটনায় পুরো নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয়েছে। ‘ফুটবল’ প্রতীকের প্রার্থী সাজেদা বেগম পরাজয় মেনে নিয়ে বাড়িতে চলে যান। কিন্তু অজ্ঞাত টেলিফোন পাওয়ার পর ঘর থেকে ডেকে এনে তাকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়, যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও বিজয়ী হওয়ার নামে তাকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে আমি মনে করি। এটি মূলতঃ ইলেকশন নয়, সিলেকশন হয়েছে।

প্রত্যক্ষ ভোটে বিজয়ী উল্লেখ করে বিবি ফাতেমা শিল্পী বলেন, প্রথমে আমাকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণা করার কিছুক্ষণ পর আমার ফলাফলে ত্রুটি আছে জানিয়ে আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন এবং হোয়াটসঅ্যাপে ফলাফল পাঠিয়ে দেবেন বলে জানান। কিন্তু আমি বাড়ি না গিয়ে কর্মীসমর্থকদের সাথে নিয়ে সেখানে অবস্থান করি। এসময় নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ভূয়া রেজাল্ট সিট ঢুকিয়ে দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে দুই ঘণ্টা পর আমাকে পরাজিত ঘোষণা করেন। আমি এর প্রতিবাদ করলেও তা আমলে নেয়া হয়নি। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা আমার কর্মীসমর্থকদেরকেও মারধর করা হয়। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ীদের ফলাফল একসাথে দেয়ার নিয়ম থাকলেও রহস্যজনক কারণে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ীর ফলাফল দুই ঘণ্টা বিলম্বে ঘোষণা করা হয়।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য দাবি করে শিল্পী বলেন, ২০০৪ সাল থেকে আওয়ামী রাজনীতির সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছি। ১০ মাসের বাচ্চাকে কষ্ট দিয়ে রাজনীতি করেছি, এটা কি আমার প্রাপ্য ছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে ভোট জালিয়াতির এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে কি না তা আমার জানা নেই। এটি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষণ্ন করার অপপ্রয়াস মাত্র। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাইফুল আজম শাকিল, শেখ জামাল, মোরশেদ আলম, রায়হান তালুকদার ও মো. তৈয়ব প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদ্যুতের প্রিপেইড মিটারের হিডেন চার্জ বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপির আরো ১৩ জন বহিষ্কার, মোট ২১৬