নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১০ মার্চ, ২০২১ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া হাজতি ফরহাদ হোসেন প্রকাশ রুবেলকে (২০) নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) একটি টিম। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৫.৫৫ মিনিটে নরসিংদীর আদিয়াবাদ শেরপুর কান্দাপাড়া চরাঞ্চল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর সড়কযোগে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে সন্ধা সাড়ে ৬টায় তাকে কোতোয়ালী থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে সংবাদ সম্মেলন শেষে মহানগর হাকিম হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে তাকে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কোতোয়ালী থানায় করা সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ জোন) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, ঘটনার দিন ভোর সোয়া ৫টায় কর্ণফুলী ভবনের ৫ম তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে নিচে নামে রুবেল। সেখান থেকে হাত মুখ ধুয়ে নির্মাণাধীন ভবনের কাছে যায় এবং ৬০ ফুট উঁচু সমান চতুর্থ তলায় উঠে পড়ে। একপর্যায়ে সেখান থেকে লাফ দেয় এবং নিরাপত্তা প্রাচীর পার হয়। প্রথমে ট্রেনে করে ঢাকা এবং পরে ঢাকা থেকে নরসিংদী গিয়ে আত্মগোপন করে।
পলাশ কান্তি নাথ বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালানো হয়েছে। অবশেষে নরসিংদী থেকে তাকে গ্রেপ্তার হয়। সে এখন অসুস্থ। লাফ দেওয়াতে পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। এছাড়া তার মুখমন্ডল ফুলে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভাঙ্গা পা নিয়ে কিভাবে রুবেল নরসিংদী গেল তা জানতে চাইলে পলাশ কান্তি নাথ বলেন, সে মানসিকভাবে সবল একজন যুবক। তবে কিভাবে সে এই অবস্থায় নরসিংদী গেল তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। আশা করছি তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। পালিয়ে যাওয়ার প্রকৃত কারণ জানতে চাইলে তিনি তদন্তে উঠে আসবে বলে জানান। তবে সিএমপির একটি সূত্র জানিয়েছে, মূলত কয়েদীদের কাছ থেকে ফাঁসি হবে জেনেই পালানোর পরিকল্পনা এবং একপর্যায়ে তা বাস্তবায়ন করে রুবেল।
সংবাদ সম্মেলনে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিনও বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, রুবেলকে আজকেই (গতকাল মঙ্গলবার) আদালতে পাঠানো হবে এবং তার কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানতে আদালতে রিমান্ড চাওয়া হবে।
ফরহাদ হোসেন প্রকাশ রুবেল ৬ মার্চ কারাগার থেকে নিখোঁজ হন। এই ঘটনায় ওইদিন রাতেই কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পরে ৭ মার্চ জেল সুপার মো. রফিকুল ইসলাম ও ডেপুটি জেলার আবু সাদ্দাতকে প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় কারা অধিদপ্তর। সাময়িক বহিষ্কার করা হয় কারারক্ষী নাজিম উদ্দিন ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী ইউনুছ মিয়াকে। আরেক সহকারী প্রধান কারারক্ষী কামাল হায়দারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। ঘটনা তদন্তে খুলনা বিভাগীয় ডিআইজি প্রিজন ছগির মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। একই সাথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপুরো ডোজ টিকার দুই সপ্তাহ পর সুরক্ষিত
পরবর্তী নিবন্ধযেভাবে কারাগার থেকে পালালেন রুবেল