নগর বিএনপির ইউনিট সম্মেলন শুরু

এক মাসে ১২৯ ইউনিটের টার্গেট প্রথম দিনে দুটি সম্পন্ন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৪ আগস্ট, ২০২২ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

নগর বিএনপির আওতাভুক্ত ইউনিটগুলোর ‘কাঙক্ষিত’ সম্মেলন শুরু হয়েছে। প্রথম দিন গতকাল শনিবার পশ্চিম বাকলিয়া ও আলকরণ ওয়ার্ডের পৃথক দুটি ইউনিটের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। আজ রোববার লালখান বাজার ওয়ার্ডের আওতাভুক্ত দুটি ইউনিটের সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নগরের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের ১২৯টি ইউনিট সম্মেলন আগামী এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্য ঠিক করেছে দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন ও ‘আন্দোলন’কে সামনে রেখে সারা দেশে বিএনপিকে তৃণমূল থেকে সাজানোর নির্দেশনা দিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব তারেক রহমান। এর অংশ হিসেবে গত ২১ মার্চ নগর বিএনপির সাংগঠনিক ইউনিটগুলো পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি ‘পুনর্গঠন সংক্রান্ত টাস্কফোর্স টিম’ গঠন করা হয়। এছাড়া গঠন করা হয় পাঁচটি উপ-কমিটি। ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন করার জন্য উপ-কমিটিকে ৯০ দিনের সময় দেয়া হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের দেড় মাস পার হলেও একটি ইউনিট সম্মেলনও করতে পারেনি তারা। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ৩ আগস্ট তারেক রহমান নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করকেও পুনর্গঠন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা দেন। এ দুজনকে সম্পৃক্ত করার ১০ দিনের মাথায় গত রাতে দুটি ইউনিটে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হলো।

অভিযোগ আছে, আহমেদ আজম খানের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স টিম গঠন হওয়ার পর বিভক্ত হয়ে পড়ে নগর বিএনপি। এ সময় ‘কৌশলে’ নগর বিএনপির বিদ্যমান কমিটির আহ্বায়ক-সদস্য সচিবসহ সিনিয়র নেতাদের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম থেকে দূরে রাখা হয়। এতে ফাটল ধরে দলটির সাংগঠনিক ঐক্যে। এর জের ধরে উপ-কমিটির নেতৃত্বে সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটে। এছাড়া দায়িত্ব পাওয়ার আগে গত জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে টানা চারদিন চট্টগ্রামে অবস্থান করেন আহমেদ আজম খান। ওই সময় তার সঙ্গে চট্টগ্রামের যেসব নেতার একাধিক বৈঠক হয়েছে পরবর্তীতে তারাই উপ-কমিটিতে স্থান পেয়েছেন বলে গুঞ্জন আছে, যা বিভক্তি আরো বাড়িয়ে দেয়। বিভক্তির কারণে নির্ধারিত সময়ে কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। যদিও দায়িত্বপ্রাপ্তদের দাবি, সিলেটের বন্যা, ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সাংগঠনিক কার্যক্রম কিছুটা স্থগিত থাকায় সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে শাহাদাত ও বক্কর পুনর্গঠন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার পর ইউনিট সম্মেলন কার্যক্রম গতি পায়। সর্বশেষ গতকাল সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত ১৭ নং পশ্চিম বাকলিয়া ‘এ’ ইউনিটের সভাপতি হয়েছেন মোহাম্মদ জাফর ইকবাল। মো. ওসমান গনি সাধারণ সম্পাদক, আমির হোসেন সিনিয়র সহসভাপতি, আশরাফুল ইসলাম সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও মো. শামসুল হক সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ডা. শাহাদাত হোসেন ও আবুল হাশেম বক্কর। সভাপতিত্ব করেন কোতোয়ালী-বাকলিয়া-চকবাজার পুনর্গঠন কমিটির টিম প্রধান এম এ আজিজ। বাকলিয়ার পর রাতে হয় ৩১ নং আলকরণ ওয়ার্ডের ‘এ’ ইউনিট শাখার সম্মেলন। ইউনিটটিতে আবদুল মান্নান সভাপতি, আবদুশ শুক্কর সাধারণ সম্পাদক ও মোহাম্মদ আনোয়ার সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।

নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন আজাদীকে বলেন, নগরে ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের প্রতিটিতে তিনটি ইউনিট আছে। সব মিলিয়ে ১২৯ ইউনিট। যেহেতু সময় বেশি সময় নেই তাই আগামী এক মাসের মধ্যে সবগুলো ইউনিট সম্মেলন শেষ করব।

তিনি জানান, প্রতিটি ইউনিটে ১৫০ জন থেকে ২০০ জন সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে যারা তিন বছর পর্যন্ত দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের কাউন্সিলর করা হয়। প্রতিটি ইউনিট কমিটি হচ্ছে ২১ সদস্যের। পরে তিনটি ইউনিটের ৬৩ জন ওয়ার্ড সম্মেলনে কাউন্সিলর হবেন।

নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর আজাদীকে বলেন, ইউনিট সম্মেলন শুরু করেছি। ইনশাল্লাহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সবগুলো ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন করে মহানগর বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে পারব।

নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ বলেন, বাকলিয়া, কোতোয়ালী ও চকবাজার থানার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সবগুলো ইউনিট কমিটি অচিরেই সমাপ্ত করব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবি ও গুচ্ছ একই দিনে পরীক্ষা
পরবর্তী নিবন্ধচা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু