নগর উন্নয়নে ১৮ প্রকল্পে বরাদ্দ ৭ হাজার ২০৯ কোটি টাকা

চসিক, সিডিএ ও ওয়াসার জন্য বরাদ্দ সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

মোরশেদ তালুকদার | শনিবার , ৩ জুন, ২০২৩ at ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ

নতুন অর্থ বছরের (২০২৩২০২৪) প্রস্তাবিত বাজেটে নগর উন্নয়নে ১৮ প্রকল্পে ৭ হাজার ২০৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং চট্টগ্রাম ওয়াসার ১১ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪ হাজার ৪২৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা। বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় হবে শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন, সড়ক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বাসট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, সবুজ উদ্যান নির্র্মাণ, টানেল নির্মাণ, বন্দরের উন্নয়ন এবং আলোকায়ন প্রকল্পে।

গত বৃহস্পতিবার ‘উন্নয়নে অভিযাত্রার দেড় দশকে পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’ শিরোনামে ঘোষিত ২০২৩২৪ অর্থ বছরের বাজেট বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। জাতীয় বাজেটে গুরুত্ব পেয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম। এ অঞ্চলের ৫৫টি বৃহৎ প্রকল্পে ২৭ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে আছে শহরের উন্নয়নে গৃহীত ১৮ প্রকল্পও। প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিন সেবা সংস্থার মধ্যে চসিকের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭৯৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। এছাড়া ওয়াসা ১ হাজার ৬৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং সিডিএ ১ হাজার ৯২৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ পেয়েছে ৪ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। নগরের পাঁচলাইশ জাতিসংঘ পার্কে সবুজ উদ্যান নির্মাণসহ পৃথক তিনটি প্রকল্প রয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের। এসব প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয় ২১৫ কোটি। নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয় ১০০ কোটি টাকা এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ প্রকল্পে ৭৩৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

চট্টগ্রাম ওয়াসা : চট্টগ্রাম ওয়াসার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় হবে দুই প্রকল্পে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি পানি পরিশোধন প্রকল্পে ৩৪৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্পে ১ হাজার ৩৪৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

চসিক : চসিকের বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় হবে চার প্রকল্পে। এর মধ্যে বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খালখনন প্রকল্পে ১০০ কোটি টাকা, চসিকের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও বাসট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে ৮৫ কোটি টাকা, পরিচ্ছন্নকর্মী নিবাস নির্মাণ প্রকল্পে ৬০ কোটি টাকা, মডার্নাইজেশন অব সিটি স্ট্রিট লাইট সিস্টেম অ্যাট ডিফারেন্ট এরিয়া আন্ডার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রকল্পে ৫২ কোটি ১১ লাখ টাকা, সিটি কর্পোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

সিডিএ : সিডিএর বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় হবে পাঁচ প্রকল্পে। এর মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পে ৫৮০ কোটি টাকা, লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে ৬৫০ কোটি টাকা, কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্পে ৬৮৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, প্রিপারেশন অব চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পে ১৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পে (পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা, তৃতীয় সংশোধিত) ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর : চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় হবে দুই প্রকল্পে। এগুলো হচ্ছে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প (চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অংশ) ২ হাজার ৬৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং একই প্রকল্পে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর অংশে বরাদ্দ দেয়া হয় ১ হাজার ৬৮৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের তিন প্রকল্প : গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকল্পগুলোর মধ্যে নগরের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় আধুনিক সুযোগসুবিধা সম্পন্ন জাতিসংঘ সবুজ উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্পে ৭ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি ভবন নির্মাণ প্রকল্পে ৫৮ কোটি টাকা এবং চট্টগ্রামের ৩৬টি পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি কর্মকর্তাকর্মচারীদের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাজেট সময়োপযোগী হয়নি
পরবর্তী নিবন্ধপ্রয়োজনে সামাজিক কর্মসূচি বাড়বে : কৃষিমন্ত্রী