দুই কোটি ২০ লাখ টাকার ইয়াবা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১৩

ঘুমধুম ও ভাটিয়ারীসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারিসহ বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে দুই কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যের সাড়ে ৭৩ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আমাদের নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি জানান, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে পৃথক অভিযান চালিয়ে ৬০ হাজার দেড়শ পিস ইয়াবাসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশ। এ বিষয়ে ওসি মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, গতকাল সোমবার ঘুমধুম বেতবুনিয়া হেডম্যন পাড়া থেকে ৪৮ হাজার ৭৫০ পিস ইয়াবাসহ ঘোনার পাড়া ৫নং ওয়ার্ডের বাদশা মিয়ার ছেলে জিয়াউল হককে (২৮), ঘুমধুম টিভি টাওয়ার এলাকা থেকে ৯ হাজার ৫০ পিস ইয়াবাসহ বালুখালি ২০ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তবারক আলীর ছেলে নুর মোহাম্মদকে (২০) এবং একই এলাকা থেকে ১ হাজার ৯শ পিস ইয়াবাসহ বালুখালি ২নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসেম মোল্লার ছেলে ছৈয়দ কাসেমকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
আমাদের চন্দনাইশ প্রতিনিধি জানান, চন্দনাইশ থানা পুলিশ বিশেষ অভিযানে ইয়াবাসহ ২ জন এবং পরোয়ানাভুক্ত ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গত রোববার রাতে পৃথক এসব অভিযান চালানো হয়। পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চন্দনাইশ থানা পুলিশ রোববার রাতে কাঞ্চনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অস্থায়ী চেকপোস্ট বসায়। এসময় চট্টগ্রামমুখী একটি প্রাইভেট কারে (ঢাকা মেট্টো-ম-১১- ৫৫৬৫) তল্লাশি চালিয়ে ২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। অভিযানে ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানার আমুয়া এলাকার হাবিব তালুকদারের ছেলে মানিক তালুকদার (৩১) ও জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার মালন্স এলাকার মৃত জসিম উদ্দীনের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলমকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই রাতে পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ধোপাছড়ি শংখেরকুল এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে জিআর মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি আজম উদ্দিন প্রকাশ আজম, পূর্ব সাতবাড়িয়া এলাকার মো. আলতাজ মিয়ার ছেলে সিআর মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি মো. আদর প্রকাশ বাচা মিয়া এবং সাতবাড়িয়া নগরপাড়ার মৃত নুরুচ্ছফার পুত্র জিআর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. নজির মাহামুদ বাদশা প্রকাশ জামাই বাদশাকে গ্রেপ্তার করেছে।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন সরকার জানান, গ্রেপ্তার ৫ আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে লোহাগাড়ায় ইয়াবাসহ দুই বাসযাত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার রাতে চট্টগ্রাম-কঙবাজার মহাসড়কের উপজেলার চুনতী ফরেস্ট রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উখিয়ার বালুখালী এলাকার আবদুর রশিদের ছেলে মো. আইয়ুব আলী (২২) ও রামু থানার জোয়ারিয়ানালা এলাকার ছালেহ আহমদের ছেলে মো. শাহজাহান (২০)।
থানার এসআই গোলাম কিবরিয়া জানান, চট্টগ্রাম শহরমুখী যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশী করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তারা ইয়াবাগুলো পাচারের উদ্দেশে কঙবাজার থেকে নিয়ে যাচ্ছিল।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকের হোসাইন মাহমুদ জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আমাদের সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি জানান, সীতাকুণ্ডে পৃথক অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৭০ পিস ইয়াবা, ১৫ লিটার চোলাই মদ এবং ২০ পুরিয়া গাঁজাসহ ৬ জনকে আটক করেছে মডেল থানা পুলিশ।
গত রোববার রাতে এসআই রাশেদুজ্জামান বেগের নেতৃত্বে সীতকুণ্ড বাস স্ট্যান্ডে পৃথক অভিযানে আব্দুল আলীমের (২৯) কাছ থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। আটক আলীম টেকনাফের হোয়াইক্যং গ্রামের মৃত মো. ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। এছাড়া ৭ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে রাজন রক্ষিত (৩২) নামে এক যুবককে। সে রাঙামাটির তবলছড়ির তপন রক্ষিতের ছেলে।
অন্যদিকে গতকাল সোমবার সকালে এসআই ইলিয়াছ মাহমুদের নেতৃত্বে পৃথক অভিযানে ইদ্রিস মিয়া প্রকাশ ছুট্টুর (৫৫) কাছ থেকে ১৫ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়েছে। সে উপজেলার ৮নং সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর দেলীপাড়ার কবির আহমদের ছেলে। এছাড়া ছোট কুমিরা এলাকায় আবদুল জলিলের কাছ থেকে (৫৫) ২০ পুটলি গাঁজা ও ৭০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। সে মসজিদ্দা জৈন্না পুকুর পাড়া এলাকার মৃত তোফায়েল আহমদের ছেলে। একইদিন এসআই নুরুন নবীর নেতৃত্বে ভাটিয়ারি থেকে এক হাজার পিস ইয়াবাসহ ফারুক হোসেন (২৭) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। সে কঙবাজারের ভারুয়াখালী (পশ্চিম পাড়া) গ্রামের মো. ফেরদৌসের ছেলে। একইদিন এসআই আশরাফ ছিদ্দিকীর নেতৃত্বে ভাটিয়ারি বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে মো. জিয়াবুল হক (২২) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তার কাছ থেকে ১ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। সে টেকনাফের হ্নীলা গ্রামের নুরুল হাকীমের ছেলে।
এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, সরকার মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। আটককৃতদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। নিয়মিত অভিযান চলছে। তাদের মাদকদ্রব্য আইনে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে শনাক্ত আরো ১৯৩ মৃত্যু ২ জনের
পরবর্তী নিবন্ধহাফিজ উদ্দিন ও শওকত মাহমুদকে বিএনপির শো’কজ